নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পর্ব ০৭ | Unselfish love part 07 | bdstoryboo.com

 #নিঃস্বার্থ_ভালোবাসা

পর্ব ০৭

কলমে:M K

তিথি আদিবাকে বললো
- সত্যি কথাটা বলে দিতিছিস।  তাদের আদরের ছেলে কি করতে গেছিলো?
- তুই কি পাগল?  তারা এটা শুনলে কতোটা কষ্ট পাবে।
- ও তো তাই চাই। তারা কষ্ট পাক।  তাদের কথা কি ও চিন্তা করে।  করলে কি আর এসব করতো?
- যাক ও একটা ভূল করেছে এবার যদি নিজেকে শুদ্রাতে পারে। 
- ও কখনোই পারবে না।  তুই ফোন দে আমি বলে দিবো।  তারা তাদের ছেলে নিয়ে চলে যাক।  এখানে বসে মরলে আমাদের দোষ হবে শুধু ।
- তুই মাথাটা ঠান্ডা কর।  গরম করলে চলবে বল। 
- আদিবা ফোনটা দে আমি ফোন করেই বলবো।  ওকে আমার নাম্বার দিয়ে কল করছি। 

কাব্য বেড থেকে বেরিয়ে এসে
- প্লিজ তিথি তুই বাসায় কিছু বলিস না।  আমি তাদের স্বপ্নকে মাটিতে মেশাতে চায় না।  আমি তাদের স্বপ্ন পূরণ করে দিবো। 
আদিবা তিথি হা হয়ে গেলো।
- তুই বাসায় জানালে তারা অনেক কষ্ট পাবে।  আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবো না
তাদের সাথে অনেক অন্যায় কাজ করেছি।  প্লিজ তিথি কিছু বলিস না। 
তিথি বললো
- কেন রে?  তুই যে আত্মহত্যা করতে গেছিলি তখন মনে ছিলো না।  মোহের পিছনে ছুটতিস তখন মনে ছিলো না।  তাদের তুই ঠকাইছিস মনে ছিলো না। 
- আমি সত্যি এতদিন ভূল মোহের ভেতর ছিলাম।  যারা নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসলো তাদের আমি প্রতি নিয়ত ঠকিয়ে গেছি।  যাকে ভালোবাসলাম সেই আমাকে ঠকালো। 
- এটাই নিয়ম রে।  তোকে আমি সাবধান করছিলাম।  শুনিসনি।  মা বাবাকে ঠকায়ছিস তুই নিজে ও ঠকে গেলি।  এই জন্যই বলে কেউ কাউকে ঠকিয়ে ভালো থাকতে পারে না।  সে নিজে ও একদিন ঠকবে। 
- আমাকে প্লিজ মাফ করে দে।  কথা দিচ্ছি আর কখনো এমন কিছু করবো না। 
তিথি আদিবা কাব্যকে নিয়ে বেডে গেলো।




রেহানা বেগম করিম মিয়াকে বললো
- এখন তো খাবার মুখে দাও।
- হ্যা নিয়ে এসো দুজনে খেয়ে নি।  পোলা আমাদের ভালো আছে। 
- হ্যা বসো আমি খাবার নিয়ে আসি।
- হ্যা। খেয়ে কাজে বের হবো।  সামনে পোলার টাকা পয়সা লাগবে।  জোগাড় করতে হবে। 

রেহানা বেগম খাবার আনতে চলে গেলো। 

তিথি কাব্যকে বললো
- তুই সত্যি এমনটা করবি না তো।
- না করবো না।  বিশ্বাস কর।
- তোকে আমি আর বিশ্বাস করি না।  তাই বলিস না৷
- সত্যি বলছি।  এই দেখ আমার মাথা ছুঁয়ে বলছি।
আদিবা বললো
- বলছে যখন বিশ্বাস করে নে।  এবারের মতো একটা সুযোগ দি। 
- হ্যা দিতে পারি ও যদি আমার শর্তে রাজি হয়।
- ঠিক আছে  আমি তোর সব শর্তে রাজি।
- ভেবে বল রাজি তো।
- হ্যা রাজি।
- ঠিক আছে।  আমার প্রথম শর্ত পড়াশোনা ভালোভাবে করবি।  ২য় শর্ত মা বাবাকে মিথ্যা বলে টাকা পয়সা নিবি না।  ৩য় শর্ত আমি যা বলবো সব শুনবি।  যখন যেটা বলবো সব করবি।  রাজি তো।
- হ্যা আমি রাজি। 
- ঠিক আছে।  এখন রেস্ট নে।  আমরা দুপুরে এসে তোকে নিয়ে যাবো। 
- ঠিক আছে। 

তিথি আর আদিবা বেড থেকে বের হলো।

রেহানা বেগম খাবার এনে দিলো।  দুজনে মিলে খেয়ে নিলো।  করিম মিয়া খাওয়া শেষ করে কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলো।  রেহানা বেগম তার পিছনের জমিতে কাজ করতে গেলো। 


আদিবা তিথিকে বললো
-ওকে একা রেখে যাওয়াটা ঠিক হবে না। 
- কেন?  ও তো বললো আর কিছু করবে না। 
- তবু ও রে।  মন ভাঙ্গা তো বুঝিস।  একাকিত্বে পড়লে কতটা কষ্ট পাবে আর তখন কি করবে কে জানে?
- আমরা একটু পর চলে আসবো।  চল। 
- তুই বাসায় যা আমি এখানে আছি। তুই আসলে আমি চলে যাবানি। 
- আচ্ছা
তিথি চলে গেলো।  আদিবা বেডের ভেতর ঢুকে কাব্যের দিকে তাকালো। কাব্যের চোখ বন্ধ কিন্তু গাল বেয়ে পানি ঝড়ে যাচ্ছে।  আদিবা বলে উঠলো
- কোনো সমস্যা তোমার?
আদিবার গলা পেয়ে কাব্য চোখ খুলে উঠে বসে চোখের পানি মুছতে লাগলো।  তখন আদিবা বললো
- এখন লুকিয়ে লাভ নেই।  তুমি এসব ভেবে কষ্ট পেয়ো না।  যেটা হয় ভালোর জন্যই হয় বুঝছো। 
কাব্য নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না  চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে
- আমি খুব খারাপ।  বাজে একটা ছেলে।  আমি ওর জন্য আমি আমার মা বাবাকে এভাবে ঠকালাম ও একটু বুঝলো না।  আমার সাথে কেন করলো এমনটা।  আমি তো ওকে খুব ভালোবেসেছিলাম। 
আদিবা কাব্যের চোখের পানি দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারলো।  চোখের পানি পড়ে গেলো।  আদিবা উঠে বেডের বাহিরে চলে গেলো।  কাব্য চোখের পানি ঝরাতে লাগলো  বলতে লাগলো

যার জন্য করিলাম সব সেই আজ পর
যাদের ভাবতাম পর তারাই এখন আপন।
এ কেমন নিয়ম এই দুনিয়ার
যার জন্য ঠকালাম মা বাবা বন্ধুবান্ধবকে
সেই আজ ঠকিয়ে দিয়ে ধরলো অন্যের হাত। ।
আমার হবে না কখনো ক্ষমা
কি করেছি আমি এসব। 

আদিবা টিস্যু নিয়ে বেডে ঢুকলো কাব্যের সামনে বসে নিজ হাতে টিস্যু দিয়ে চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে
- এখন কেঁদে কিছু হবে না। যদি পারো মা বাবার জন্য কিছু করে দেখাও।  জীবনে আমরা ভূল পথে যেয়ে ডাক্কা না খেয়ে বুঝতে পারি না লাইফ টা কতোটা কষ্টের। 
কাব্য চুপ করে আছে।  আজ ওর বলার মতো ভাষা নেই।  আদিবা কাব্যের সাথে কথা বলতে চাইতো কিন্তু কাব্য পাত্তা দিতো না।  কাব্যের এটা মনে পড়াতে
- সরি।  আমাকে পারলে ক্ষমা করে দিবেন। 
- কেন?
- আমি এতোদিন অন্ধ হয়ে ছিলাম। । আপনার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার ও করছি আমাকে প্লিজ মাফ করে দিবেন। 
- কি বলছো এসব?  মানুষ মাত্রই তো ভূল হয়।  আর ঐই ভূল থেকেই মানুষ সঠিক পথ খুজে পায়।  তাই এসব এখন ছাড়ো। 
- আপনি তো এখনো খান নি?
- খেয়ে নিবো পড়ে।
- না না এখন
কাব্য উঠতে যাবে তখন আদিবা বললো
-খাবার দিয়ে যাবে।  পাচ মিনিট লাগবে। 
,- ঠিক আছে। 

আদিবা কাব্যের সাথে গল্প করতে লাগলো।  কাব্যকে একাকিত্ব বুঝতে দিবে না বলেই আদিবা বক বক করছে।  কিছুক্ষণ পর তিথি খাবার নিয়ে বেডে ঢুকলো।  কাব্য তিথির দিক তাকালো।  তিথীর কথা শুনে আদিবা হা হয়ে গেলো।  তিথি থ ম খেয়ে গেলো।  কাব্য মাথা নিচু করে নিলো........

(Waiting for next part.......) 
নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পর্ব ০৭    

Post a Comment

Previous Post Next Post