আমার_শহর_তুমি_ময়
পর্ব ২
লেখা:Meherab Kabbo
#bymeherabকাব্য ক্লাসে যেয়ে দু বেঞ্চ পরে বসলো। কাব্যের তৃতীয় বেঞ্চে বসতে ভালো লাগে তাই ও ওখানেই বসে সবসময়। ক্লাসের ভেতর কারিমা ওর বান্ধবীরদের সাথে হাসিমুখে ঢুকলো মাঝখানের বেঞ্চের সারি বাদ দিয়ে তৃতীয় সারির বেঞ্চে তৃতীয় বেঞ্চে বসলো। কাব্য কারিমার দিকে চেয়ে আছে। কিছুক্ষণ রাহাত আসলো। কাব্যকে ডাক্কা দিয়ে
- তুই তো মামু পুরো শেষ।
- তুই দিলি তো আমার কল্পনা করাটা নষ্ট করে।
- এত কল্পনা না করে দম থাকলে সামনে যেয়ে বাস্তবে বল। আমার মনে হয় না তুই পারবি এই কাজ করতে।
- তুই দেখতে চাস আমি পারি কি না?
- হ্যা দেখা পারলে।
কাব্য জিদ করে উঠে সোজা কারিমার বেঞ্চের সামনে যেয়ে দাঁড়ালো। কাব্য কি বলবে বুঝতে পারছে। মাথায় হাত দিয়ে চুল চুলকাচ্ছে। লিমা এটা দেখে
- কি রে কাব্য কি হয়েছে? এখানে কেন তুই?
কাব্য থ ম খেয়ে
- না মানে ইয়ে ঐ। কিছু না।
কাব্য নিজের জায়গায় চলে আসলো। রাহাত হাসছে। লিমা রাহাতের দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে বোঝালো ব্যাপার কি? রাহাত দু হাতের দু আঙ্গুল জোড়া করে বোঝালো সামথিং। লিমা আঙ্গুল দিয়ে কারিমাকে দেখালো। রাহাত হুম বললো। লিমা হেসে দিলো। লিমার হাসি দেখে কারিমা বললো
- কি রে পাগলের মতো একা একা হাসছিস কেন?
- ঐটা তুই বুঝবি না।
-বুঝবো না মানে বোঝাই বল বুঝে যাবো।
- তুই এখনো ছোট খুকি আছিস বুঝলি।
- তাহলে তুই বলবি না।
- না।
কারিমা রাগে লিমার মাথার চুল টেনে ধরে
- বুঝাবিনা আমাকে।
- বুঝাবো ছাড় ছাড়
কারিমা লিমার এমন কান্ড দেখে সবাই হাসছে। রাহাত কাব্যকে বললো
- এই মেয়েকে জীবনসঙ্গী করলে তোর কপালে দুঃখ আছে।
- তোকে বলছে।
- দেখলি না লিমা কে কি ভাবে মারতে ছিলো। আর তুই যদি ঐ মেয়েকে প্রপোজ করলে তো তোকে পিটবে।
- পিটলে পিটুক কিন্তু আমার ওকেই চায়।
- যদি না হয়
- চুপ কর। এরকম বদ দোয়া দিবি না। তোদের বদ দোয়ায় আমি ওকে হারাতে চায় না।
- গেইলি তো সামনে পারলি তো না কিছু বলতে। আর পারবি ও না। পাখি অন্য কেউ এসে নিয়ে যাবে।
- চুপ থাক।
ক্লাসে স্যার আসলো। সবাই চুপচাপ করে বসে আছে। এই স্যারকে সবাই ভয় পায়। মারের থেকে কথার পচানি দিয়ে মাটির অর্ধেক ঢুকিয়ে দেয়।তবে স্যারের মনে মায়া বেশি। স্যার ক্লাস নেওয়া শুরু করলো। সবার বাড়ির হোমওয়ার্ক জমা দিতে বললো। সবাই জমা দিলো। স্যার শিক্ষার্থীর সংখ্যা গুনে খাতা গুনলো। একটা খাতা কম তখন স্যার বললো
- কে বাসা থেকে হোমওয়ার্ক করে আনোনি ওঠে দাঁড়াও। আমার জেনো বের না করা লাগে কে দাও নি।
স্যারের কথা শুনে কারিমা উঠে দাঁড়ালো। স্যার বললো
- তুমি কে? আমার ক্লাসে তো আগে পরে দেখি নি।
- আমি কারিমা। গতকালকেই এই কলেজে ভর্তি হয়েছি।
- ওহ আমি আসাদ স্যার। আমার সম্পর্কে কিছু জানো।
- হুম স্যার শুনেছি।
- শুনেছো যখন তখন পড়াগুলো ও শুনে নিয়ে কমপ্লিট করে নিয়ো।
- জ্বী স্যার
- বসো।
কারিমা বসে পড়লো। স্যার হোমওয়ার্কের খাতাগুলো দেখতে লাগলো। দেখতে দেখতে স্যার একটা খাতা হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে
- এই কাব্য উঠে দাঁড়া।
কাব্য উঠে দাঁড়ালো
- তোর কি লজ্জা শরম কিচ্ছু হবে না। এতো বলি তাও চামড়ায় লাগে না তোর।
- স্যার আমি তো আজকে হোমওয়ার্ক করে এনেছি।
স্যার ধমক দিয়ে
- এটা হোমওয়ার্ক নাকি প্রেমের কবিতা লিখছিস।
স্যারের ধমক শুনে পাশের ক্লাসের ম্যাডাম চলে আসলো। এসে
- আসাদ স্যার কি হয়েছে?
- আর বলেন না। ঐ যে বান্দর টাকে এতো বলি লজ্জা বলতে কিছু নেই। একটা রাস্তার কুকুরকে বললে ও তো লজ্জা হবে। কিন্তু এর নেই।
- কি করছে?
- বাসা থেকে হোমওয়ার্ক করে আনতে বলছি। লিখছে প্রেম পত্র।
- কি লিখছে পড়ুন তো?
আসাদ স্যার পড়া শুরু করলো
প্রিয় পেয়েছি তোমাকে খুঁজে আমার অন্তরালে
তোমার কাজল কালো আখিতে
আমায় ডুবিয়ে নিয়েছে কল্পনার জগতে
এ কি মায়া তোমার চোখে
তোমার চোখের চাহনিতে
করেছো কাবু আমাকে
বার বার ইচ্ছা করে তোমার ঐ
দুটি আঁখি দেখতে।
কোথায় পাবো তোমাকে
এক দেখায় হারিয়ে গেছি আমি
তোমার ও মাঝে, খুঁজবো আমি কোথায় তোমাকে
এই শহরের অলিতে গলিতে
কেন এসে দিলে দেখা
কেন কাড়লে চোখের ঘুম,
কেন ভাসালে স্বপ্নের সাগরে ।
স্যার থেমে গেলো। ম্যাডাম বললো
- কি হলো থামলেন কেন?
- আর নেই।
কাব্য বেঞ্চের তলে ঢুকে পড়লো। ম্যাডাম কাব্যের দিকে তাকালো কিন্তু দেখতে পেলো না। ক্লাসের সবাই হাসছে এটা শুনে । স্যার বললো
-কাব্য কই গেলো
রাহাত বললো
- স্যার মুরগি খোপে।
- এই বেয়াদব তোকে আমি এসব শিখাচ্ছি।
- স্যার ও নিচে।
- কাব্য উঠ। নায় কিন্তু বেত আনবো।
কাব্য উঠে দাঁড়ালো। ম্যাডাম বললো
- কাব্য কি ব্যাপার এসব কি? স্যার কি তোমাকে এসব করে আনতে বলছে।
- ম্যাম সরি।
- শোনো তুমি যেটা লিখছো তা এখন আর চলে না। এটা শুধু হাসি মাত্র।
- ম্যাম আবেগ দিয়ে লিখছি।
- যায় দিয়ে লিখো। এসব ছেড়ে পড়াশোনায় মন দাও। সবাই সবকিছুতে হ্যাপি না। আর কেউ বুঝবে ও না।
ম্যাডাম চলে গেলো। স্যারের মুখটা কালো হয়ে গেলো। কাব্যের দিকে তাকিয়ে পড়লো
- তোকে জানিস আমার কি করতে মন চাচ্ছে।
- অভিমান টা তো আগে ভাঙ্গান।
স্যার কাব্যের দিকে পেন ছুঁড়ে মেরে ক্লাস থেকে চলে গেলো। কাব্য হাসছে। । স্যারের চলে যাওয়াতে সবাই অবাক হয়ে গেলো। রাহাত কাব্যকে বললো
- কি হলো ব্যাপারটা বুঝলাম না।
- এতো বুঝতে হবে না৷
কাব্য ক্লাস থেকে চলে গেলো। কারিমা লিমা কে বললো
- ঐ ছেলেটা কে?
- ও কাব্য।
- ওরা ক্লাসে আসে কেন? ক্লাস না করলেই তো পারে।
- কেন?
- ওদের জন্যই তো ক্লাসে স্যাররা ঠিক মতো ক্লাস নিতে পারে না। যত্তসব।
- আরে ও তেমন ছেলে না। তুই কিছু দিন থাক বুঝতে পারবি৷
- আমার ওতো বোঝার নেই৷ আজাইরা পোলাপাইন।
- এভাবে খোঁচা মেরে কথাটা কি বলা ঠিক হলো।
- তোমাকে তো বলিনি কথাগুলো। তুমি এখানে আসছো কেন?
- তো কি বলছো। তুমি কি ভাবো আমি কবিতা লিখতে পারি না তোমাকে নিয়ে।
- তা তুমি জানো আমার জানার বিষয় না।
- আমার এই হৃদয়ে কতো কবিতা আছে জানো।
- হৃদয়ের ভেতরে শরবত বানায় খাও।
শোনো প্রিয়
আমি পারি না ভূলিতে তোমাকে
এ কি মায়ায় বাঁধলে আমাকে
- আচ্ছা তারপর কি জানো
- তারপর তোর মাথা। মন চায় তোর মাথা ফাটায় দিতে৷
কাব্য সামনে যেয়ে হেসে উঠলো । তারা দুজনে অবাক হয়ে গেলো।
(Waiting for next part)
বিঃদ্রঃ ভূলত্রুটি মাফ করবেন। পাশে থাকবেন ধন্যবাদ।
Post a Comment