সিনিয়র গার্লফ্রেন্ড। Senior Girlfriend

 সিনিয়র গার্লফ্রেন্ড Senior Girlfriend

লেখক সাদমান আদ্-দ্বীন 

সিনিয়র গার্লফ্রেন্ড। Senior Girlfriend


এইযে আপনার বাসা ভাড়া নিন

ভাইয়াঃ এইটা কেমন ব্যবহার? নিজের বাসায় থাকতেও বাসা ভাড়া?

আমিঃ সেইটা আপনাদের ভালো ভাবেই বোঝার কথা বলেই বেরিয়ে গেলাম।

ভাবিঃ এখনও রেগে আছে?

ভাইয়াঃ এত রাগ যে কোথা থেকে আসে

ভাবিঃ দোষ তো তোমারই, ঐদিন ঐরকম ব্যবহার না করলেও পারতে। 

আর একদিনেও তো রাগে নি, তোমাদের ব্যবহারে আস্তে আস্তে এমন হয়ে গেছে।


ভাইয়াঃ তা তো বুঝতেই পারছি

ভাবিঃ মা বাবা কবে আসবে?

ভাইয়াঃ পরশু, মা বাবা আসলে আবার কি দিয়ে কি করে বসে আল্লাহই ভালো জানেন

ভাবিঃ আচ্ছা পরের টা পরে দেখবো, এখন বের হও, লেট হচ্ছে তো তোমার।

ভাইয়াঃ আচ্ছা আল্লাহ হাফেজ।


এদিকে আমি বের হয়ে ভার্সিটির দিকে গেলাম। 
আমার পরিচয়,

নামঃ সাদমান আদ্-দ্বীন প্রতীক। বাবা অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, মা গৃহিণী। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি।


এতক্ষণ যার সাথে কথা বললাম সে আমার ভাইয়া। তার সাথে কিছু ঝামেলার জন্য আমি কথা বলা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু তার সাথে না সবার সাথেই। 


ভার্সিটিতে আসতেই,


কি রে আজকেও নাকি দুলাভায়ের সাথে ঝগড়া বেয়াদবি করে বাসা থেকে বেরিয়েছিস।

কথাটা বললো আমার ভাবির আপন ছোট বোন জান্নাত।


আমিঃ আমি কারও সাথেই বেয়াদবি করিনি, তাদের বাসায় থাকি, ভাড়া দিতে হবে তো, তাই ভাড়াটা দিয়েছি শুধু।

জান্নাতঃ তোর বাসায় থাকতে ভাড়া দিয়েছিস মানে

আমিঃ সরি আমার বাসা না আপনার আপুর শ্বশুরের বাসা।

জান্নাতঃ আচ্ছা তুই তাদের উপর রেগে আছিস কেনো এত?

আমিঃ রাগ তাদের উপর করা যায় যারা রাগ ভাঙায়, এক কথায় যারা আপনাকে বোঝে।

আমাকে বোঝার মতো তো কেউ নেই। তাই রাগ ও নেই।


জান্নাতঃ ওরে পিচ্চি দেখি ইমোশনাল কথা বলা শুরু করেছে

আমিঃ থাকেন আপনার ফাজলামো নিয়ে

জান্নাতঃ রাগ করলি নাকি?

আমিঃ বললাম না আমি রাগ করতে পারি না বলেই চলে গেলাম।


রুহিঃ সবসময় তোকে রাগ দেখায় আর তুই হাসিস।

জান্নাতঃ পিচ্চিটার রাগের ভিতরে আলাদা একটা ফিলিং আছে। আপুকে বলে পিচ্চিটার গলায় ঝুলে পরতে হবে।

রুহিঃ এ, তুই কি সত্যিই ওর প্রেমে পাগল হলি নাকি?

জান্নাতঃ অনেক আগেই। 

রুহিঃ কেমনে কি?

জান্নাতঃ আপুর বিয়ের জন্য যা যা করেছে ও, তুই জানলে তুই ও প্রেমে পরে যেতি

রুহিঃ থাক, আমি এমনিই ভালো।


এদিকে আমি আমার মতো ক্লাসের শেষ বেঞ্চে গিয়ে বসে পরলাম।

একটু পর,

বায়েজিদঃ সাদমান কেমন আছিস?

আমিঃ

সিয়ামঃ পড়ালেখা হচ্ছে সব

আমিঃ 

বায়েজিদঃ আর কতদিন রেগে থাকবি? সেদিন আসলেই বুঝতে পারিনি রে

আমিঃ আমি বলেছি আমি রেগে আছি?

আমার কোনো বন্ধু, পরিবার কাউকে লাগবে না।

সিয়ামঃ দেখ ভাঃ আমরা আসলেই বুঝতে পারিনি যে তুই কষ্ট পাবি

আমিঃ কষ্ট কে পেয়েছে? আমি সারাজীবন এমনই 

এমন সময় স্যার চলে আসায় আর কথা হয় নি। 


প্রথম ক্লাস করেই ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলাম কাজে।

কাজ বলতে একটা হোটেলে পার্ট টাইম কাজ করি। তবে কোনো দিন মন খারাপ থাকলে ফুল টাইম কাজও করি। কাজ করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। আমি একটা টেবিলে অর্ডার নিতে গেলাম। তুই এখানে কেনো? তোকে কিছুর অভাবে রেখেছি আমরা?


তাকিয়ে দেখি মা বাবা।

আমিঃ স্যার আপনাদের অর্ডার টা দিন প্লিজ

বাবাঃ বল তোর কিসের অভাব? যে কাজ করতে হবে

আমিঃ 🤣🤣🤣🤣🤣, আপনারা মাঝে মাঝে অনেক ভালো জোকস করেন, একটা অমানুষ জানোয়ার কে আপনারা আর কত দিবেন? তাই নিজের খরচ চালিয়ে নিচ্ছি

মাঃ কথাগুলো এখনও ভুলিস নি?

আমিঃ ভোলার মতো কথা হলে অবশ্যই ভুলতাম।

মাঃ দেখ বাবা যা অতীতে হয়ে গেছে তা


আমিঃ আমার এই Move on,  be positive এই ধরণের কথাবার্তায় এলার্জি আছে।

আর আমার আরো অর্ডার নিতে হবে সো প্লিজ কি অর্ডার দিবেন বলুন।

ওহ আমাকে বলত কষ্ট হচ্ছে?


ভাই এই টেবিল টা আপনি দেখেন তো।

(আ্একজন সহকর্মীকে বলে আমি চলে গেলাম)

ম্যানেজারঃ মা বাবার সাথে এমন ব্যবহার করে কেউ?

আমিঃ মা বাবা আমার সাথে যা করেছিলো সেগুলো ফেস করলে হয়তো আজ আপনি এই কথা গুলো বলতেন না।

মা বাবা আর রেস্টুরেন্টে না বসে চলে গেলেন বাসায়।


ভাবিঃ আপনাদের না পরশু আসার কথা ছিলো?

মাঃ হ্যা ভাবলাম তোদের সারপ্রাইজ দিবো। কিন্তু নিজেরাই সারপ্রাইজড হয়ে গেলাম।

ভাবিঃ আগে ভিতরে এসে ফ্রেশ হয়ে নিন।


তারপর শুনছি।

মা বাবা ফ্রেশ হওয়ার পর,


ভাবিঃ এবার বলুন কি হয়েছে

মাঃ প্রতীক কে আজ একটা রেস্টুরেন্টে দেখলাম

ভাবিঃ খাওয়া দাওয়া করতে গেছে হয়তো

মাঃ ঐখানে ওয়েটারের কাজ করছিলো

ভাবিঃ কিহ্? ও ওয়েটারের কাজ করে, আমার কাছে তো বলেছিলো টিউশনি করে

মাঃ টিউশনিই বা করবে কেনো? 

ভাবিঃ আপনার বড় ছেলেকে আজকে বাসা ভাড়া দিয়েছে

মাঃ এত সব হচ্ছে?  আমাদের জানাওনি কেনো?

ভাবিঃ জানিয়েই বা কি লাভ? ও কি কারো কথা শোনে? আগে আমার সাথে একটু আধটু কথা বলতো এখন তাও বলে না


রাত ১২ টা, আমি বাসায় আসলাম,


ভাবিঃ এত রাত পর্যন্ত বাইরে থাকে কেউ?

আমিঃ সরি ম্যাম আসলে আজকে কাজের চাপ ছিলো

ভাবিঃ কাজ? তুমি না টিউশনি করো?

আমিঃ ঐটাও তো কাজই 

ভাবিঃ তা টিউশনি কি রেস্টুরেন্টে করতে হয়

আমিঃ আমার জন্য সব জায়গায় হয়, এখন প্লিজ রুমে যেতে দিন নাহলে বলে দিন আমি অন্য বাসায় শিফট হয়ে যাবো।


এমনিও জানোয়ার রা বাসার বাইরেই শোভা পায়।


ভাবিঃ কি সব উল্টা পাল্টা বলছো?

আমিঃ উল্টা পাল্টা মনে হলো? যাইহোক রুমে যাবো না বাইরে তারাতাড়ি বলেন। কালকে ভার্সিটিতেও যেতে হবে।

বলে নিজেই রুমের দিকে আগানো শুরু করলাম। রুমে এসে ভাবছি,


আমার সাথেই এমন হয় সবসময়। ক্লাস ৯ এ ছিলাম .... (চলবে)


Post a Comment

Previous Post Next Post