সিনিয়র খালাতো বোন যখন পুলিশ অফিসার Senior Khalato Bon jokhon Police Officer
অভ্র আহমেদ লিমন
পর্বঃ ০৬
এভাবেই চলে গেলো ৩ টি বছর......
শিফার পড়ালেখা শেষ। আমি অনার্ষ ৪র্থ বর্ষে উঠলাম। আপু এখন আমাদের বাসায় থাকে। আবার হঠাৎ করে কলেজে চলে যায় দেখতে আমি কি করি। তো যাই হোক একদিন শিফা আমার কাছে আসলো। আমি শিফার জন্য অপেক্ষা করতে ছিলাম নদীর পাড়ে।
লিমন তোমার তো সামনে পরীক্ষা তোমার এখন ভালোভাবে পড়া উচিত (শিফা)
হ্যা আমি পড়ালেখা করি তো (আমি)
হ্যা করো তবে আরো ভালোভাবে করতে হবে আমাদের সামনে ভালোভাবে চলার জন্য, আমাদের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য ভালো রেজাল্ট করতে হবে (শিফা)
হুম অবশ্যই আমি আরো ভালো ভাবে পড়াশোনা করবো (আমি)
শোনো আমিও তোমাকে আমাদের সুন্দর একটা ক্যারিয়ার গঠনে সাহায্য করতে চাই (শিফা)
হুম তুমি সুন্দর ভাবে সংসার করবে তাহলেই হবে (আমি)
দেখো আমিও চাকরি করতে চাই (শিফা)
মানে আমার বাবার কি কোনো কিছুতে কমতি আছে
যে তোমার চাকরি করতে হবে। আমি পড়ালেখা শেষে বাবার বিজনেস স্টার্ট করবো (আমি)
দেখো তুমি রেগে যাচ্ছো কেনো আমি ঐভাবে বলি নাই। আমার ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিলো আমি পুলিশের চাকরি করবো তাই বলছিলাম (শিফা)
না না দরকার নেই তোমার চাকরি করার (আমি)
লিমন প্লিজ তোমার যতোদিন পড়ালেখা শেষ না হবে ততোদিন আমি চাকরি করবো। পড়ালেখা শেষ হলেই চাকরি ছেড়ে দিবো (শিফা)
এটা কিন্তু ঠিক না তুমি কিন্তু আমার কথার অবাধ্য হচ্ছো (আমি)
প্লিজ প্লিজ লিমন তুমি কি আমার এই ইচ্ছে পূরণ করতে দিবে না (শিফা)
আমি কিছুক্ষণ ভাবলাম। ওর যখন এতই ইচ্ছে করুক এক বছর চাকরি। ওর ইচ্ছেটাও পূরণ হবে।
আচ্ছা তুমি করো চাকরি তবে আমার পরীক্ষা শেষ হলেই চাকরি ছেড়ে দিতে হবে ( আমি)
আচ্ছা এইতো আমার কলিজা বলেই জরিয়ে ধরলো (শিফা)
পরেরদিন শিফা আমার কাছে আসলো।
শোনো আমাকে ৩ মাসের জন্য ট্রেনিংয়ে যেতে হবে তুমি কষ্ট পাবে না। এই ৩ মাস মাঝে একটু একটু যোগাযোগ করতে পারবো।
এই কথা শুনে আমার অবস্থা খারাপই এই ৩ মাস কিভাবে শিফাকে ছাড়া থাকবো।
তোমার যেতে হবে না প্লিজ আমি থাকতে পারবো নাহ (আমি)
প্লিজ লিমন দেখো মাত্র ৩ মাসই তো তারপর আমরা আবার আগের মতো দেখা করতে পারবো (শিফা)
তবুও (আমি)
লিমন এই ৩ মাস কোনো কোনো টেনশন করবা না আমার জন্য। আর মেয়েদের থেকে অবশ্যই দূরে থাকবা। পড়ালেখা করবা শুধু একটু আড্ডা দিও মন ভালো থাকবে বলেই কেদে দিলো (শিফা)
তুমি কাঁদছো কেন (আমি)
আমারও যেতে ইচ্ছে করতেছে নাহ লিমন কিন্তু এটা বাবারও ইচ্ছে (শিফা)
আচ্ছা কেঁদো নাহ ভালো ভাবে ট্রেনিং শেষ করে ফিরে এসো (আমি)
হুম (শিফা)
পরের দিনই শিফা চলে গেলো ট্রেনিংয়ে। এদিকে আমি সারাদিন অস্থিরতায় থাকি কবে ৩ মাস শেষ হবে। তাই সারাদিন পড়ালেখা আর আড্ডা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। কিন্তু রাতে অবশ্যই শিফার কথা মনে পড়ে বুকে একাকিত্বের ব্যাথা নিয়ে ঘুমিয়ে থাকি। অনেক কষ্টে কেটে গেলো ৩ মাস। এই ৩ মাসে শিফা মাত্র ৪ বার ফোন করেছিলো। আজই শিফা ফিরে আসবে তাই ওর জন্য অপেক্ষা করতেছি ওদের বাসায়। শিফা বাসায় ফিরে আসলো। আমি ওকে উপর থেকে দেখেই ওর রুমে বসে আছি। অন্যদিকে শিফা আমাকে ওর বাসায় দেখতে পায় না। তাই খুব অভিমান জমা করে।
শিফা তোর কি মন খারাপ (বড় ভাবি)
নাহ ভাবি একটু খারাপ লাগছে (শিফা)
ওহ আচ্ছা তাহলে রুমে গিয়ে বিশ্রাম নে (মেঝ ভাবি)
আচ্ছা ভাবি তোমাদের দেবর কোথায় (শিফা)
জানি নাহ হয়তো বাইরে কোথাও আছে (বড় ভাবি)
ওহ আজকে ওকে পেলে ওর খবর আছে (শিফা মনে মনে)
কিছু বললি (মেঝ ভাবি)
নাহ কিছু না আমি রুমে যাচ্ছি (শিফা)
ঐ কোথায় যাচ্ছিস (খালামনি)
এইতো রুমে যাচ্ছি মা (শিফা)
ওহ আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নে একটু পরই খেতে আসবি আজ সবাই একসাথে লাঞ্চ করবো (খালামনি)
তারপর শিফা মন খারাপ করে যেই রুমে ঢুকতে যাবে তখনই শিফাকে টান দিয়ে আমার বুকের মাঝে নিয়ে নিলাম। এটা আচমকা শিফা অনেকটা ভয় পেয়ে যায়। তাই শিফা যেই চিৎকার করতে যাবে আর আমাকে দেখতে পেল।আমাকে দেখেই থামিয়ে দিলো চিৎকার। আমরা দুজনে দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি।
তুই এখানে কি করছিস (শিফা রেগে)
এইতো বোনকে দেখতে আসলাম (আমি মজা কর)
হ আমিতো এখন বোনই হবো আল্লাহ জানে ৩ মাস ছিলাম নাহ বলে কোন কালনাগিনী তোকে তার মায়াজালে জরিয়েছে (শিফা)
হুম আপু (আমি)
এবার তো রেগে বোম
কুত্তা তুই অন্য কাউকে ভালোবাসিস আবার আমাকে জরিয়ে ধরলি কেন রেগে কাঁদো কাঁদো ভাব (শিফা)
তাও ঠিক আমার ভুল হয়ে গেছে আপু (আমি)
আজকে তোর খবর আছে। কোন মেয়ে তোর সাথে লাইন মারার সাহস পেয়েছে বল ওকে আগে দেখছি আমি (শিফা)
আর মজা করলাম নাহ। জরিয়ে ধরলাম আবার বুকে। কিন্তু ছোটাছুটি করছে
আবার জরিয়ে ধরছিস কেন যা ঐ কালনাগিনীর কাছে যা (শিফা)
ভালোবাসি তো (আমি)
কাকে (শিফা)
তোমাকে (আমি)
এবার শিফা থেমে জরিয়ে ধরে কেদে দিলো।
তুমি জানো এতোদিন আমার কি কষ্ট হয়েছে তোমায় ছাড়া (শিফা)
আমারো কি কম কষ্ট হয়েছে নাকি (আমি)
কিছুক্ষণ দুজনে জরিয়ে ধরে বসে রইলাম।
আচ্ছা আমি এখন নিচে যাই এতোক্ষণ তোমার রুমে থাকলে কেউ কিছু মনে করবে (আমি)
আরে তুমি থাকো তো কেউ কিছু মনে করলে করুক (শিফা)
তোমার মুখটা শুকনো লাগছে যাও ফ্রেশ হয়ে খাবে (আমি)
তোমারও তো অবস্থা খারাপ নিশ্চয়ই শরীরের যত্ন নাও নি (শিফা)
আচ্ছা যাই হোক যাও ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো আমি নিচে আছি (আমি)
ওকে যাও আমি আসতেছি (শিফা)
তারপর আমি নিচে গিয়ে ভাইপো কে নিয়ে মজা করতে লাগলাম। আর এই ভাইপো টাও আমার সাথে দুষ্টমি করতে ভালোবাসে। যাই হোক শিফা একটু পর চলে আসলো
টেক বিষয়ে জানতে এখানে ক্লিক করুন
আমার বাবাই কি করে (শিফা)
তুমি পচা তুমি এতোদিন কোতায় ছিলে (মাহফি)
আরে বাবা আমি কাজ করতে গেছিলাম (শিফা)
হুম তুমি কাজ করো শুধু আমায় একটু ভালোবাসো নাহ (মাহফি)
আরে বোকা এইতো এসে পড়েছি আর যাবো নাহ (শিফা)
সত্যিইই (মাহফি)
হুম (শিফা)
আচ্ছা আমরা এখন অনেক মজা করতে পারবো (মাহফি)
হয়েছে অনেক চলো সবাই খেতে যাবো (বড় ভাবি)
তারপর সবাই খেতে গেলাম। খাওয়ার মাঝখানে
বাবা আমাকে কালকেই জয়েন করতে হবে কাজে (শিফা)
মা কয়েকদিন ঘোরাঘুরি করে কাজ শুরু করতি (খালু)
নাহ বাবা আমার কাছে আমার ক্যারিয়ার সবকিছুর আগে (শিফা)
কিন্তু মা তুই এতো ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছিস কেন (খালামনি)
মা আমি চাই আমার ভবিষ্যত প্রজন্ম সুখে শান্তিতে কাটাতে পারুক (শিফা)
সেটা নিয়ে তোকে এতো ভাবতে হবে নাহ (মা)
খালামনি আমি চাই নিজেই সবকিছু করতে (শিফা)
মা দেখিস তুই কিন্তু বেশি করতেছিস যার জন্য পরে না আবার পস্তাতে হবে (মা)
আমি এই বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না (শিফা)
মা বাদ দাও এসব (আমি)
শিফার কথাগুলো শুনে খারাপ লাগলো। তাই চুপচাপ খাবার খেয়ে নিলাম।
পরেরদিন থেকে শিফা চাকরিতে জয়েন করলো। তারপর...............
Post a Comment