সিনিয়র খালাতো বোন যখন পুলিশ অফিসার পর্বঃ ০৪ Senior Khalato Bon jokhon Police Officer part 4

সিনিয়র খালাতো বোন যখন পুলিশ অফিসার 

অভ্র আহমেদ লিমন 

পর্বঃ ০৪



সবাই অধির আগ্রহে তাকিয়ে আছে ডাক্তারের বের হওয়ার জন্য। কিন্তু ৩ ঘন্টার ভিতরও ডাক্তার বের হলো নাহ। সবাই আরো চিন্তায় পড়ে গেলো। মা তো উঠে আমার নাম ধরে ডাক দিয়ে আবার অজ্ঞান হয়ে যায়। মায়ের অবস্থাও খুব খারাপ।  তাকেও ভর্তি করে দিলো। বড় ভাবি মায়ের দেখাশুনা করতে লাগলো। ভাইয়েরা নিশ্চুপ চোখের পানি ফেলছে। মেঝ ভাবি শিফাকে স্বান্তনা দিচ্ছে।

 হঠাৎ তখনই ডাক্তার বের হলো

আব্বু ডাক্তারের সামনে গেলো।

ডাক্তার আমার ছেলে কি অবস্থা ওর কিছু হবে নাতো (বাবা)

দেখুন রোগীর কন্ডিশন খুব একটা ভালো না ইমারজেন্সি O+ রক্ত লাগবে আমাদের কাছে যা ছিলো সব শেষ (ডাক্তার)

আংকেল আমি রক্ত দিবো আমার রক্তের গ্রুপ O+ (শিফা)

আমার রক্তের গ্রুপও O+ আমার রক্তও নিতে পারেন (বড় ভাইয়া)

আপনাদের দুজনেরই রক্ত দেওয়া লাগবে। ওর রক্তক্ষরণ অনেক হয়েছে। ওকে পর্যাপ্ত রক্ত দিতে হবে (ডাক্তার)

ওকে তাহলে তাই করুন (শিফা ও বড় ভাইয়া)

নার্স তাড়াতাড়ি ওদের থেকে রক্ত নিন (ডাক্তার)

ওকে স্যার বলেই ভাইয়া ও শিফাকে নিয়ে চলে গেলো (নার্স) 

আপনারা আল্লাহর কাছে দোয়া করুন৷ রোগির কন্ডিশন খুব একটা ভালো না বলেই চলে গেল (ডাক্তার)

অন্যদিকে শিফা আপু আর ভাইয়া রক্ত দিলো আর আমাকে রক্ত দেওয়া হলো। তাদের রক্ত দেওয়া শেষ হলে তাদের বাইরে বেঞ্চে বসিয়ে দেয়। তারপর ডাক্তার তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। ডাক্তার বের হয়।

ডাক্তার লিমনের কি অবস্থা (আব্বু)

রোগি এখন কিছুটা রেসপন্স করতেছে চিন্তার কোনো কারণ নেই।আমরা একটা ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছি ৮ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরবে। তবে ও মাথায় আঘাত পেয়েছে সাথে শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে যার জন্য ওর খেয়াল রাখতে হবে (ডাক্তার)

আংকেল আমি ওর সব দিক খেয়াল রাখবো (শিফা)

দেখে রেখো খুব সাবধানে ওর অবস্থা অতোটাও ভালো নাহ আর কোনো সমস্যা হলেই সাথে সাথে আমাকে জানাবা (ডাক্তার)

ডাক্তার চলে গেলো। সবাই চিন্তিত অবস্থায় বসে রইলো আমার রুমে। রাত শেষে ভোর হচ্ছে তবুও তাদের চোখে কোনো ঘুম নেই।

৮ ঘন্টা পর.....................

আমার জ্ঞান ফিরলো।

পান ন ন নি দাওওওও কেউ (আমি)

সবাই আমার দিকে তাকালো। আম্মু তাড়াতাড়ি আমাকে পানি খাইয়ে দিলো। খালামণি এসে আমার পাশে বসলো। বড় ভাইয়া ডাক্তার আনতে গেলো। শিফা দাড়িয়ে নিশ্চুপ আমার দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলতেছে। ডাক্তার আংকেল চলে আসলো। আমাকে চেক আপ করে দেখলো সব ঠিক আছে কিনা।

আপনার কোনো চিন্তা করবেন আর কোন বিপদের আশংকা নেই তবে ওর খেয়াল রাখতে হবে অনেক ভালো করে (ডাক্তার)

ওকে ডাক্তার (আব্বু)

আমাকে আরও ৩ দিন হাসপাতালে রাখা হলো। তারপর শিফা আপুর জোরাজুরিতে আব্বু হাসপাতাল থেকে বাসায় আনার সিদ্ধান্ত ছিলো। আমি তেমন একটা কথা বলিনি এইকয়দিন ডাক্তার মানা করেছিলো। তো যাই হোক আমাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হলো। সবাই আমাকে খুব কেয়ার করতেছে। সবচেয়ে বেশি শিফা আপু। তিনি আমাকে একা ছাড়েনি। রাতেও আমার পাশে থেকেছে কেউ কিছু মনে করেনি। কারণ আমি গুরুতর অসুস্থ ছিলাম। তো একদিন সকাল বেলা আপু খাবার খাইয়ে দিতেছে

আপু তুমি এতো কষ্ট করতেছো কেন। চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে তোমার।  ঘুমাও না নাকি?? (আমি)

প্রথমত তুই অসুস্থ আমার রাগ উঠাবি না। আমাকে আর কখনো আপু বলবি নাহ বললে তোর খবর আছে (শিফা আপু)

এহ কেনো তুমি আমার বড় তোমাকে তো আপু বলবোই (আমি)

এখন তোকে কিছু বলবো নাহ তুই শুধু একবার সুস্থ হ তারপর মজা বুঝাবো (শিফা)

কেনো আমি কি করেছি তুমি এভাবে কথা বলতেছো কেনো??  (আমি)

সেটা সময় হলেই বুঝবি এখন চুপচাপ খেয়ে নে (শিফা)

আমি চুপচাপ খাবার খেয়ে নিলাম। এভাবে চলে গেলো ১ মাস। বন্ধুবান্ধব রা প্রতিদিন এসে দেখে যেতো। আর একটা কথা উল্লেখ করা হয়নি আমার বন্ধুরা আমার এক্সিডেন্টের রাতেও হাসপাতালে ছিলো।যাই হোক এখন আমি মোটামুটি সুস্থ অনেকদিন বাসার বাহিরে বের হইনা আজ বের হচ্ছি তখনই আম্মুর ডাক আসলো

কিরে কোথায় যাচ্ছিস (মা)

এইতো মা একটু বের হচ্ছি (আমি)

বের হচ্ছিস এটা শিফা জানে (মা)

না আম্মু আপুকে বলিনি (আমি)

তারপর আম্মু শিফাকে ডাক দিলো।

হ্যা খালামণি বলো (শিফা)

দেখতো লিমন যেনো কোথায় বের হচ্ছে (মা)

তুই বের হচ্ছিস আমাকে বলিসনি কেন বলেই রাগিভাবে আমার দিকে তাকালো (শিফা)

আপু এমনি বের হচ্ছিলাম তো (আমি ভয় পেয়ে)

এখন শিফা তুই রেডি হয়ে আয় ওর সাথে যাবি ওকে একলা ছাড়বো নাহ (মা)

আচ্ছা খালামণি আমি আসতেছি। আর তুই এখানেই দাড়িয়ে থাকবি নাহলে তোর খবর আছে (শিফা)

আমি চুপচাপ মাথা নারলাম। এমনিতেই যে রাগি এরপর কথা না শুনলে আবার কি না কি করে।

আম্মু তোমার আপুকে ডাকা লাগে (আমি)

মেয়েটা তোর জন্য কতো কষ্ট করেছে এতোদিন। একটা দিনও বাইরে বের হয়নি। যা আজকে ওকে নিয়ে ঘুরে আয় (মা)

হুম (আমি)

আমি ভাবতেছি" সত্যিই তো আপু আমার জন্য এই কয়দিনে অনেক কষ্ট করেছে। আমার একবার আপুকে বলা উচিত ছিলো। যাই হোক আগে আপুর রাগ দূর করতে হবে নাহলে আমার অবস্থা কি করবে জানি নাহ। তখনই আপু আসলো

কিরে কি ভাবছিস (শিফা)

কিছু নাহ চলো যাই (আমি)

হুম চল (শিফা)

তারপর আমি আপুকে নিয়ে বের হলাম। 

কোথায় যাবি তুই এখন (শিফা)

প্রথমে বন্ধুদের সাথে দেখা করে ওদের সাথে আড্ডা দিবো (আমি)

ওকে আমিও নীলিমাকে আসতে বলতেছি তুই আড্ডা দিবি আর আমরাও পাশে বসে আড্ডা দিবো (শিফা)

ওকে আপু (আমি)

হুম তবে বেশি সময় থাকা যাবে না আমরা অন্য এক জায়গায় যাবো (শিফা)

কোথায় যাবা আপু  (আমি)

সেটা সেইসময় দেখবি আনে  এখন একটা রিকশা ডাক (শিফা)

তারপর একটা রিকশা ডেকে আমার আড্ডার স্থানে গেলাম। হারামি গুলোকে আগেই ফোন দিয়েছিলাম তাই ওরা আগেই সেখানে বসে আছে। আমরা রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দিতেই নীলিমা আপুও এসে পড়লো। তারপর আমি বন্ধু দের কাছে গিয়ে বসে আড্ডা দিতে লাগলাম। আজ সিগারেট খেলাম নাহ আপু দেখলে আমি শেষ। বন্ধুরাও কেউ বের করলো নাহ। অন্যদিকে শিফা আপু আমার উপর যেনো নজর রাখতে পারে তেমন করে বসলো। যাই হোক কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পরই আপু আমার কাছে আসলো

BoyzTech - latest tech news | Tricks and Tips

লিমন চল আমারা এখন যাবো (শিফা)

আপু আরেকটু থাকি না তুমিও নীলিমা আপুর সাথে আড্ডা দাও (আমি)

নাহ নীলিমাকে পাঠিয়ে দিয়েছি। তোকে উঠতে বলছি উঠ (শিফা রাগি চোখে) 

আচ্ছা উঠতেছি (আমি)

তারপর বন্ধুদের বিদায় থেকে বিদায় নিয়ে উঠে হাটতে থাকলাম।

ঐ একটা রিকশা ডাক (শিফা)

আমি তার কথামতো রিকশা ডাকলাম। তারপর আপু তার কথামতো রিকশা গিয়ে এক জায়গায় থামালো।  জায়গাটা নিরিবিলি। আপু ঘাসের উপর বসলো।

আপু তুমি এখানে আনলে কেনো আমাকে (আমি)

এখানে বস আগে (শিফা)

বলো এখন বসতে বসতে (আমি)

তুই কি কিছুই বুঝিস নাহ (শিফা)

কি বুঝবো বলো তুমি এই নিরিহ ছেলেটাকে যা করো (আমি)

তুই নিরিহ তাই নাহ আজ আমাকে বিয়ে করলে কাল এক বাচ্চার থাকবি (শিফা)

কি বললে (আমি)

হুম আমি তোকে ভালোবাসি লিমন

💔

যেদিন থেকে বুঝতে শিখেছি তোকে আপন করে রেখেছি,

তোকে চোখের আড়াল করতে চাইনি ভালোবাসতে চেয়েছি;

তোকে নিয়ে একেছি মনে রোমাঞ্চকর অনেক স্বপ্ন, 

তোকেই চাই জীবনে আমি তোরই উপর হয়ছি মগ্ন।

💔

এটা কখনও কেউ বলেনি আমায়। যাই হোক আমি এটা আপু দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছি৷ আপু আমাকে অনেক আগে থেকে ভালোবাসে আমি সেটা বুঝতেই পারিনি।

আপু কি বলছো এসব (আমি)

তুই আরেকবার আপু বললে তোর ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে অসুস্থ করে আবার সেবা করবো (শিফা)

আমি তোমাকে জীবনেও বিয়ে করবো নাহ তুমি আমাকে শেষ করে দিবে (আমি)

তুই আমাকে বিয়ে না করলে তোকে খুন আমি আত্মহত্যা করবো (শিফা)

তুমি থাকো আমি গেলাম বলেই দৌড় দিয়ে ১ টা রিকশা নিয়ে বাসায় (আমি)

আপুও পিছু পিছু একটা রিকশা নিয়ে চলে আসলো বাসায়। আমি বাসায় ফিরে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে গেলাম৷ বের হয়ে দেখি আপু বিছানায় বসে আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে থাকলো। আমি ভয়ে শেষ বালিশ নিয়ে এসে আমাকে উড়াধুরা মারলে লাগলো। শেষে কোনো উপায় না পেয়ে আপুকে জড়িয়ে ধরলাম। আপুতো একেবারে শান্ত হয়ে গেলো। আপু হঠাৎ করেই আমার গালে একটা কিস করে দৌড়ে পালালো

তারপর................

Post a Comment

Previous Post Next Post