স্কুল জীবনের প্রেম পর্ব ৮ | School Jiboner Prem Part- 8

স্কুল জীবনের প্রেম পর্ব ৮ | School Jiboner Prem Part- 8

পর্ব  ৮

লেখকঃ সাদমান আদ্-দ্বীন


পরেরদিন বাসার সামনে দেখি মেঘলা  
আমিঃ আরে ম্যাডাম আজ আমার বাসার সামনে?
মেঘলাঃ প্রতিদিন তো বাসা থেকে নিয়ে যাই
আমিঃ প্রতিদিন এমন একজন আসতো যে আমাকে কষ্ট দিতে পারতো না।
মেঘলাঃ সরি, আর কখনো এমন হবে না
আমিঃ সমস্যা নাই, দোষ আমারই
মেঘলাঃ আচ্ছা আমার সাথে চল
আমিঃ যাবো না
মেঘলাঃ এইটা রাস্তা, এখানে যদি আমি চিল্লাই তাহলে কি হবে জানো তো
আমিঃ ব্লাকমেইল করছো
মেঘলাঃ ভালোভাবে বললে তো শুনবে না
আমিঃ আচ্ছা চলো 
কিছুক্ষণ পর,
নদীর পারে
মেঘলাঃ এইযে কান ধরছি, সরি
আমিঃ আমাকে সরি বলার দরকার কি
মেঘলাঃ যদি তুমি কথা না শোনো তাহলে আমি নদীতে লাফ দিয়ে দিবো। আমি সাঁতার জানি না
আমিঃ আমার জন্য জীবন দিয়ে কি লাভ? তারচেয়ে আমি লাফ দেই, তুমি তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধুকে নিয়ে নিজের জীবন শুরু করো
মেঘলাঃ আবার সেই কথা
আমিঃ কিছু কথা ভোলা সম্ভব না
মেঘলাঃ এইখানেই বসে থাকবে। 
আমিঃ আমার ক্লাসে যেতে হবে
মেঘলা সত্যিই নদীতে লাফ দিয়ে দিলো।
আমিও লাফ দিয়ে দিলাম।
কিন্তু দেশের আর দশটা নদীর মতোই এই নদীতেও পানি নাই। তাই ডুবি নাই
মেঘলাঃ কি হলো, লাফ দিলে যে
আমিঃ গোসল করবো তাই
মেঘলাঃ ব্যাগ নিয়ে
আমিঃ আমার ইচ্ছা
মেঘলাঃ চুপ, নিজেকে অনেক চালাক মনে হয়। তুমি আস্ত একটা গাধা

আমিঃ আমি গাধা না, বাঁদর হতে পারি। 
মেঘলাঃ হয়েছে, বাঁদরের মতো লাফাও এখন।
আমিঃ যখন ইচ্ছে হয় লাফাবো। 
মেঘলাঃ তুমি না রাগ করে আছো
আমিঃ হ্যা তাইতো, আমি রাগ করে আছি।
তোমার সাথে কথাও বলবো না

মেঘলা হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে ধরলো,
এতদিনের রিলেশনশিপে ওর হাত ধরেছি, এর বেশি কখনো কিছুই না।
আজ সোজা জড়িয়ে ধরলো
মেঘলাঃ তুমি রাগ করলে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।
দোষ করেছি ঠিক আছে, তুমি আমাকে বোঝাতে, তা না করে তুমি আমাকে ছেড়ে যাচ্ছো
আমিঃ ধরে রাখার অধিকার নেই যে।
মেঘলাঃ আচ্ছা আগে উপরে ওঠো, পরে ঠান্ডা লাগলে তখন সমস্যা 
ওঠার পর,
মেঘলাঃ প্রপোজ করো আমাকে
আমিঃ আমি কেনো করবো
মেঘলাঃ কালকে থেকে আমাকে কাঁদিয়েছো তাই
আমিঃ তুমি কি আমার স্বপ্নের রাজকুমারি হবে, সাত রাজার ধনের মতো আগলে রাখবো।
দিবে কি তোমার শাড়ির আচল ধরার অধিকার।
হবে কি আমার জীবন চলার সাথী। 
শুধু একবার হ্যা বলো, কখনো ছেড়ে যাবো না

মেঘলাঃ হ্যা

পিছন থেকে তালির শব্দ 
দেখি কয়েকটা আপু আর ভাইয়া দাড়িয়ে, 
একজনঃ ভাই আমি এত বড় হয়েও এত সুন্দর করে প্রপোজ করতে পারিনি 
একাটা মেয়েঃ তুমি সত্যিই খুব লাকি যে এমন প্রপোজ পেয়েছো
মেঘলাঃ এই বাঁদর টা কে পেয়েই লাকি আমি।

বাসায় এসে দেখি বাবা এসেছে,
বাবাঃ কি ব্যাপার, আজ তো বৃষ্টি হয়নি, তাহলে দুইজনই ভিজে
আমিঃ আপনার হবু বউমা নদীতে লাফ দিয়ে সুইসাইড করতে গেছিলো। তবে নদীতে পানি না থাকায় বেঁচে গেছে।
মাঃ এরা আমাদের চেয়ে কয়েক লেভেল উপরে।
আমিঃ আপডেটেড জেনারেশন। 
বাবাঃ আচ্ছা এখন দুইজনই ফ্রেশ হয়ে নাও।
আমরা যাওয়ার পর,
বাবাঃ আমার মনে হয় এস এস সি এর পর ওদের কাবিন করে রাখা উচিত 
মাঃ কেনো?
বাবাঃ ওদের এভাবে মেলামেশা অবৈধ
মাঃ তোমার ছেলে কাবিনের টাকা পাবে কোথায়?

বাবাঃ ও বড় হোক, তারপর শোধ করবে।
আঙ্কেলঃ কি রে বাসার, ওরা যা শুরু করেছে
বাবাঃ আমরা কম কি করেছি
আন্টিঃ গতকাল দ্বীন হাত কাটা, আজকে এ নদীতে লাফ দেওয়া। 
বাবাঃ এই এস এস সি আর ইন্টার লেভেলে অনেক আবেগ কাজ করে। 
আরেকটু বড় হলে ওরা এসব পাগলামি করবে না।
আঙ্কেলঃ তাও ওদের কাবিন করে রাখা ভালো
বাবাঃ এই নিয়েই তোর ভাবিকে বলছিলাম।
এরপর এস এস সি দিয়ে আমাদের কাবিন হলো, আর অনার্স শেষে অনুষ্ঠান করে বিয়ে
ইমাঃ স্যার সবাইযে বলে স্কুল জীবনের প্রেম সফল হয় না
আমিঃ সবারটা হয় না, তবে আমার টা হয়েছে। কারণ আমরা পেরেছিলাম 
অরিনঃ তাহলে আমরাও চেষ্টা করলে পারবো?
আমিঃ হ্যা, তবে পড়ালেখা ঠিক রেখে।
পড়ালেখা ঠিক করো, আমি তোমাদের বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।

অরিন আর ইমা হলো আমার দুই স্টুডেন্ট,  তারা একে অপরকে অনেক ভালোবাসে। 
আজ তাদের ঝগড়া শুনে মনে হলো আমার জীবনের গল্প শেয়ার করি।

স্কুল জীবনের প্রেম সবসময় সফল হয় না। তবে আমি পেরেছি আমার প্রথম ভালোবাসা কে নিজের করে নিতে।
********************সমাপ্ত****************
স্কুল জীবনের প্রেম পর্ব ৮ | School Jiboner Prem Part- 8

Post a Comment

Previous Post Next Post