স্কুল জীবনের প্রেম
পর্ব ৭
লেখকঃ সাদমান আদ্-দ্বীন
এভাবেই দুষ্টামি দিয়ে কেটে গেলো ক্লাস ৯।
ক্লাস ১০ এ সিনিয়রদের বিদায় অনুষ্ঠানের দিন,
মেঘলাঃ ঐ চলো, আজ থেকে আমরা সিনিয়র
আমিঃ তুমি সিনিয়র হয়ে থাকো, আমি জুনিয়র ই ঠিক আছি।
মেঘলাঃ মেয়েদের নাকি রেডি হতে টাইম লাগে, তাহলে তোমার টাইম লাগছে কেনো?
আমিঃ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ তো হতে দিবা
মেঘলাঃ তাড়াতাড়ি
আমিঃ আম্মু, এই মেয়ে বাসায় কেনো?
মাঃ ঘুরতে এসেছে, তোর কি, রেডি হ তাড়াতাড়ি
আমিঃ পরে বকাবকি করলে খবর আছে।
মাঃ বাপ, তুই স্কুলে যাচ্ছিস, কোনো অনুষ্ঠানে না যে ইন করে কোট পরে যেতে হবে
আমিঃ ইন তো রেগুলার ই করি, আর শীতের ভিতর কোট টাও পরলাম।
মাঃ সব তোর বাবার দোষ
আমিঃ হ্যা, বাবা তোমাকে সাথে নিয়ে গেলেই তো আর এসব দেখা লাগে না
আচ্ছা বের হচ্ছি
মেঘলা চলো।
বাসার বাইরে এসে,
মেঘলাঃ খুব স্টাইল করে চলার সখ, ঠিক না?
আমিঃ না, আমি সাধারণ থাকতে পছন্দ করি
মেঘলাঃ তাহলে এইগুলো
আমিঃ সিম্পল ড্রেস এইটা
মেঘলাঃ কোনো মেয়ের সাথে কথা বললে তোর খবর আছে।
আমিঃ
মেঘলাঃ আর এক বছর পর তো আমাদের ও স্কুল শেষ
আমিঃ
মেঘলাঃ কথা বলো
আমিঃ
মেঘলাঃ ঐ কথা বল
আমিঃ আগে বলো কথা বলবো কি না?
মেঘলাঃ মানে
আমিঃ কোনো মেয়ের সাথে কথা বলা যাবে না, তুমিও তো মেয়ে।
মেঘলাঃ আমি ছাড়া কারও সাথে কথা বলবা না।
আচ্ছা ক্লাসে চলে যাও। আমি কমন রুমে গেলাম।
ক্লাসে,
সোহানঃ ভাই আজকে এই বেশে?
আমিঃ আজ না বিদায় অনুষ্ঠান, তাই রায়হান ভাই বললো
সোহানঃ তা আমাদের এইভাবে আসার দরকার, তোর তো আছেই
আরো দশটা পটালে আমরা কি নিয়ে থাকবো।
আমিঃ আরে তোর কোটও নিয়ে আসি চল
সোহানঃ আর বাকি রা
আমিঃ ওরাও আসছে, কাল তোর বাপ ফোন নিয়ে রেখেছিলো জন্য বলতে পারিনি।
ভালো কথা আরেকটা ফোন কিনবো
সোহানঃ তোর তো এত ভালো ফোন আছে
আমিঃ আরো লাগবে আমার, এখন চল।
এদিকে,
তানজিমঃ তুমি যে বয়ফ্রেন্ডের জন্য আমার সাথে কনটাক্ট নষ্ট করলে, সে কি বলে শোনো।
আমার আর সোহানের কথা বার্তা রেকর্ড করে একটু এডিট করে শুনাচ্ছে
মেঘলাঃ ও আমার সাথে এমন করতে পারলো
তানজিমঃ দেখো একটা মেয়েকে তার বেস্ট ফ্রেন্ডের চেয়ে ভালো কেউ বোঝে না
আমিঃ ভালোই তো
মেঘলাঃ তুই এখানে কেনো, নতুন কাউকে খোজ
আমিঃ আমার কথা টা শুনো
তানজিমঃ না শুনবে না
আমিঃ কথা আমার আর মেঘলার
তানজিমঃ ও তোর সাথে কথা বলতে চাই না
আমিঃ দেখ আমি কোনো ঝামেলা চাই না
তানজিমঃ ভাগ এখান থেকে
আমাকে ধাক্কা দিয়ে
আমিও ওর নাকে ঘুষি বসিয়ে দিলাম।
ঠাসসস, ঠাসসসস
মেঘলা আমাকে মারলো
আমিঃ খুব ভালো করলে, আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে ইয়ার্কি করবো, সেইটা কেউ এসে তোমাকে ভুল ভাবে শোনালো, আর তুমি বিশ্বাস করে নিলে।
ভালো, ভালো, খুব ভালো।
তানজিমের নাকে আরো কয়েকটা বসিয়ে ওর ফোন থেকে আসল রেকর্ডিং টা শুনালাম।
মেঘলাঃ সরি, আমি আসলেই বুঝতে পারিনি
আমিঃ থাক আমাকে সরি বলা লাগবে না। আপনার আমার চেয়ে প্রয়োজনীয় লোক আছে, তাদের কেয়ার করেন
মেঘলাঃ সরি, আমি ঐ রেকর্ডিং শুনে রেগে গেছিলাম। ( কান্না করতে করতে)
আমিঃ গতবছর ও আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড এর জন্য আমি চলে গেছিলাম। আমার মা বাবাকে ব্যবহার করে আমার কাছে আবার আপনি এসেছিলেন
আজকে এতগুলো মানুষের সামনে দোষ ছাড়া চড় মেরে বুঝিয়ে দিলেন আমার চেয়ে আপনার কাছে তার দাম বেশি।
আমি তো সবসময়ই আপনার বয়ফ্রেন্ডের চেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ার চেষ্টা করেছি।
কি করিনি আমি?
যখনই আমাকে তানজিম সাহেবের জন্য ছেড়ে যেতে চেয়েছো আমি চুপচাপ সাইড হয়ে গেছি।
আমাকে এক বড় ভাইয়া বলেছিলো ভালোবাসা কখনো জোড় করে হয় না।
সিয়াম, সিয়াম
সিয়ামঃ বল
আমিঃ পুরো অনুষ্ঠানে যেনো আমার আশেপাশে এরা না আসে।
স্টেজ পারফরমেন্স থেকে এদের বাদ দে।
নাহলে আমি বাদ যাবো
বায়েজিদঃ মাথা ঠান্ডা কর
আমিঃ ঠান্ডা করেই রাখতাম। কিন্তু আমার সবচেয়ে বড় দোষ ছিলো।
মেঘলাঃ দ্বীন
আমিঃ দ্বীন মারা গেছে, আর আজ থেকে আপনাকে আমি চিনি না। আমি কাউকে কষ্ট দিতে চাই না।
তাই আমার থেকে দূরে থাকেন।
আমি বেরিয়ে গেলাম।
অনুষ্ঠানের উপস্থাপক হিসেবে পুরো সময় স্টেজে ছিলাম। মেঘলা শুধু দেখেছে। তার আর কিছু করার নেই।
বাসায় এসে আমি রুমে চলে গেলাম।
রুমে এসে,
খুব রাগ হচ্ছে,
দেখি পাশেই ব্লেড পরে আছে।
আমি সাথে সাথে ব্লেড দিয়ে হাত কাটা শুরু করলাম।
এদিকে মেঘলা আমার বাসায় এসে,
মেঘলাঃ আন্টি দ্বীন কই?
মাঃ ও তো নিজের ঘরে, কি হয়েছে, কান্না করছো কেনো
মেঘলাঃ আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি আন্টি।
ওর কথা না শুনেই ওর সাথে এমন করা ঠিক হয়নি।
তখনই সোহান এসে,
সোহানঃ আন্টি সাদমান কি রুমে?
মাঃ হ্যা, কেনো
সোহানঃ ও নিজের হাত কাটছে। আর সেইটা ভিডিও করে ফেসবুকে দিচ্ছে
মেঘলাঃ সব দোষ আমার
মাঃ না রে মা, তোদের এউ বয়সটা আবেগের।
তুইও আবেগে চলেছিস, এখন সাদমানও তাই করছে
সোহানঃ দরজা খোল কিন্তু
আমিঃ না রে ভাই
সোহানঃ আমিও বিষ খাবো, একসাথে সুইসাইড করবো আয়
আমিঃ পাগল নাকি তুই, আঙ্কেল আন্টির কথা ভাববি না একবার
সোহানঃ তুই ভাবছিস
আমিঃ আমার কিছু হবে না
সোহানঃ আমারও কিছু হবে না।
আমিও হাত কাটছি
আমি দরজা খুলে
মাথা খারাপ নাকি তোর।
ঠাসসস, ঠাসসস
সোহানঃ মেঘলার সাথে সমস্যা তাহলে মেঘলা কে কষ্ট দিতি।
আঙ্কেল আন্টির কি দোষ
আমিঃ
সোহানঃ হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে, ব্যান্ডেজ করেনে
আমিঃ ও এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে
সোহানঃ আরো দুইটা দিবো নাকি চুপচাপ বসবি
আমিঃ এমনিও অনেক খাইছি ভাই, আর খাওয়ার এনার্জি নাই
সোহানঃ আর উল্টা পাল্টা কিছু করিস না
হঠাৎ মা এসে,
ঠাসসস, ঠাসসস
মাঃ বাপের মতো হইছো?
সুইসাইড করা শিখেছিস অনেক না
আমিঃ তো কি করবো, কতগুলো স্টুডেন্টের সামনে আমাকে মারলো
মেঘলাঃ তুমিও আমাকে মারতে
আমিঃ আপনি আমার বাসায় কেনো? আপনাকে না বলেছি আমার বাসায় না আসতে
মাঃ হয়েছে চুপ কর, কি করেছিস হাতের এ
আমিঃ কিছুই হয়নি
মাঃ চুপ, ১,২,৩,৪,৫,৬
মাত্র ছয়বার কেটেছিস, তোর বাপ ১০ বার কেটে ছিলো
আমিঃ কেনো?
মাঃ আমি ব্রেকাপ করেছিলাম তাই।
আমিঃ সব মেয়েরাই এক, আমার নিরীহ বাপটারেও ছাড়ে নাই।
মাঃ তোর বাপ নিরীহ?
আমিঃ অনেক নিরীহ,
মাঃ হয়েছে বাপের চামচা। শীতকালে হাত কেটেছো, দেখো কেমন লাগে
আমিঃ মজাই লাগছে
মাঃ মজা লাগছে, এই নে
একটু ভায়োডিন হাতে লাগালো
আমিঃ ও বাবাগো জ্বলে গেলো গো
সোহানঃ সবাই মার নাম নেই
আমিঃ মায়ের নাম নিলে আরো দিবে।
মাঃ সে তো এমনিও দিবো
আমিঃ সোহান, ভাই কালকে শুধু দেখা কর।
তোর ট্রিট পাওনা আছে
সোহানঃ আজকেই দে
আমিঃ দাড়া,
👊👊👊👊👊🤛🤜
হইছে
সোহানঃ আন্টি আপনার সামনে মারলো
মাঃ Its your personal matter
পরেরদিন.................................. (চলবে)
Post a Comment