স্কুল জীবনের প্রেম পর্ব - 6 | School Jiboner Prem Part- 6

স্কুল জীবনের প্রেম পর্ব - 6 | School Jiboner Prem Part-6

লেখকঃ সাদমান আদ্-দ্বীন



সন্ধ্যায় শান্তি করে ঘুমাচ্ছি হঠাৎ আমার উপর বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
আমিঃ মামি তোমার ছাদ ফুটো হয়ে গেছে
উঠে দেখি বালতি হাতে মেঘলা দাড়িয়ে।
আমিঃ ধুর, স্বপ্ন দেখছি, আবার ঘুমাই।
সারাদিন এই পেত্নী টা জ্বালায় আমাকে

মেঘলাঃ আমি পেত্নী? 
আমিঃ তু তু তু তুমি এখানে?
মেঘলাঃ কেনো? আসা নিষেধ নাকি?
আমিঃ আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড আসতে দিয়েছে?
মেঘলাঃ এখনও রেগে আছো?
আমিঃ রাগবো কেনো?
মেঘলাঃ সরি বললাম তো, আসলে আমি ঐ সময় কিছু ভেবে কথা বলিনি। ইন্ডিয়ান সিরিয়ালের মতো সমান অধিকার দাবি করছিলাম।

আমিঃ ভালো
মেঘলাঃ তোকে তো আমি
আমিঃ কি করবা? 
মেঘলাঃ আমি না, তোমার মা করবে
আমিঃ আম্মু এসেছে নাকি?
মেঘলাঃ শুধু তোমার আম্মু না, আমার আম্মু আব্বু আর তোমার আব্বুও এসেছে 
আমিঃ সবাই কেনো?
মেঘলাঃ তোমার খবর আছে।
আমিঃ আমি নির্দোষ 
মেঘলাঃ সেইটা শুধু আমি জানি, জনগণ তো আর জানে না
আমিঃ এইটা সাধারণ জণগণের প্রতি অবিচার
মেঘলাঃ চুপ, তোর আজকে খবর আছে। খুব কাঁদিয়েছিস
আমিঃ আপনি নিজেই দায়ী 
মেঘলাঃ সরি, এইযে কান ধরছি 
আমিঃ নিজের কান ধরো
মেঘলাঃ তোমার আর আমার সবই তো এক
আমিঃ তাই নাকি?
মেঘলাঃ হ্যা তাই। 
এখন বাইরে আসো।
আমিঃ না, আজ বাইরে গেলে আমি শহীদ হয়ে যাবো
মেঘলাঃ আমি আছি না।

বাইরে এসে,
বাবাঃ ভালোই তো আব্বাজান
আমিঃ আমি জানি আমি অনেক ভালো
মা আমার কান ধরেঃ আমাকে বললে কি হতো
আমিঃ উফ, আমার কান কি সরকারি সম্পত্তি নাকি যে যে পাচ্ছে সেই টানছে। একবার মারিয়া, একবার মেঘলা একবার মা
মাঃ মেঘলা তোর কান ধরেছিলো কেনো
আমিঃ কেনো আবার, সরি বলতে। 
উপস কি বলে ফেললাম।

বাবাঃ জীবনে প্রথম, এর চেয়ে বড় সয়তান দেখলাম। মেঘলার একটা সেল্যুট পাওনা 
বাবুল, রেডি।
বাবা আর মেঘলার বাবা একসাথে আর্মি স্টাইলে সেল্যুট দিলো।
মেঘলা লজ্জায় দৌড়।
আমিঃ আচ্ছা আমিও গেলাম। আমার আবার অনেক পড়া আছে

মাঃ আমি  স্বপ্ন দেখছি না তো? যে ছেলেকে সারাদিন চেষ্টা করেও বইয়ের সামনে নিয়ে যেতে পারি না সেই ছেলে ছুটির ভিতর পড়বে নাকি 
বাবাঃ আমাকে একটা চিমটি দাও তো
আউচ, এত জোরে কেউ চিমটি দেয়?
মাঃ আরো জোরে দিবো নাকি?
বাবাঃ থাক, দরকার নেই।
আঙ্কেলঃ ডি এন এ আসলেই কাজ করে।
জীবনে আমরা পালিয়েছিলাম, সেম এজ রিলেশন করে বিয়ে।
এরাও সেই পথেই এগোচ্ছে 

আমিঃ পালানো টা আর হবে না।
মাঃ পালানোর খুব সখ
আমিঃ কত স্বপ্ন ছিলো আমার 
মাঃ আমার ও অনেক স্বপ্ন তোকে জুতা পেটা করার
আমিঃ থাক, সব স্বপ্ন পূরণ করতে হয় না।
মাঃ তোকে তো আমি। তোকে আমি না মেঘলায় ঠিক করতে পারবে।
ও তোকে ঠিকই বলে, বান্দর 

আমিঃ আমি মোটেও বান্দর না
মাঃ বোঝাই যায়।
আমিঃ থাকবো না কো এই বাড়িতে,
যাবো এবার অনেক দূরে 
বাবাঃ বেশি দূরে যাস না, হারিয়ে যাস যদি
আমিঃ থাকবোই না।
চলে এলাম ছাদে।
মাঃ এত রাতে কোথায় গেলো
মারিয়া আপুঃ ছাদে। ওর ফ্রেন্ড রাও আশেপাশেই আছে তো। সব ছাদে আসবে রাতে।
বাবাঃ ওর কোন ফ্রেন্ড।
মারিয়া আপুঃ আয়েশা, বীথী, সোহানা, সিমরান।
মেঘলাঃ কিহ্? ওর খবর আছে

মেঘলা যাওয়ার পর,
মাঃ এই নামে ওর ফ্রেন্ড কোথা থেকে আসলো।
মারিয়া আপুঃ আরে সোহান সিয়াম বায়েজিদ আকাশ 
বাবাঃ তাহলে এই নাম বললি কেনো
মারিয়া আপুঃ দ্বীনের কেমন লাগছিলো বুঝুক একটু
মামাঃ তুই তো দেখি আরো বড় সয়তান।
মামিঃ ঠিক বাপের মতো।
এদিকে আমি ছাদে দাড়িয়ে আছি,
সোহানঃ ভাই দাড়িয়ে থাকার জন্য আসিনি তো
সিয়ামঃ স্কোয়াড বানা
আমিঃ আমরা পাচজন, স্কোয়াড হবে কেমনে? 
বায়েজিদঃ আমার ফোনে চার্জ নাই
সোহানঃ এই হলো লেজেন্ড। ভাই তুই দেখ শুধু
আমিঃ আরে বেবি রাগ করো কেনো?তোমার কেউ না থাকলেও আমি তো আছি

মেঘলাঃ বেবি হ্যা, ভালোই তো বেবি বেবি করিস। কই তোর সেই বেবি
আজকে ওর একদিন কি আমার একদিন

আমিঃ বায়েজিদ দোস্ত বাঁচতে চাইলে পালা
মেঘলাঃ বায়েজিদ কেনো পালাবে? তোর বেবি কই?
আমিঃ ঐ আমার বেবি কই রে
সোহানঃ বায়েজিদ কে আজ বেবি বলা হলো।
গতকাল সিয়াম, তার আগের দিন আমি এইভাবে এক এক দিন তোর এক একটা বেবি হচ্ছে। 
আমি জানি না ভাই তোর আর কতো বেবি আছে।
আমিঃ কি করছো কলার ছাড়ো৷ আমি ওদের সাথেই দুষ্টামি করছি।
মেঘলাঃ আর বীথি, আয়েশা, সোহানা, সিমরান এরা কারা?
আমিঃ এইগুলো কি ঐ বজ্জাত মারিয়া বলেছে
মেঘলাঃ হ্যা
আমিঃ তাহলে এইযে আয়েশা, সোহানা, বীথি, আর সিমরান। 
মানে আকাশ, সোহান, বায়েজিদ, সিয়াম।

মেঘলাঃ তোমরা সবাই আমাকে জ্বালাও, একটুও ভালো না তোমরা।
আমিঃ তাই, তাহলে তানজিমের জন্য আমাকে কে কষ্ট দিয়েছিলো?
শুধু নাম শুনে চলে এসেছো। 
তাহলে ওর জন্য আমাকে ইগনোর করায় আমার কেমন লেগেছিলো?
মেঘলাঃ সরি, আসলেই বুঝতে পারিনি 
আমিঃ এইভাবে হবে না, কান ধরে উঠবস করো।
মেঘলাঃ ঠিক তো?
আমিঃ হ্যা ঠিক।
মেঘলাঃ ১, ২, ৩
আমিঃ আবার আমার কান?
মেঘলাঃ যাহা তোমার তাহাই আমার। 

পিছন থেকে বাবাঃ আমি কনফিউজড, কে বড় সয়তান?
দ্বীন না মেঘলা?
মাঃ ইস, এত সুন্দর সিনেমা দেখছিলাম নষ্ট করে দিলে
আমিঃ হইছে, তোমাদের অত্যাচারে একটু শান্তি মতো থাকতেও পারবো না।
মাঃ তবেরে, দাড়া ঐখানে।
আমিঃ আজকে বাদরের মতো লাফানোর মুডে আছি,
মাঃ গেট তো এইখানে
আমিঃ এই বিল্ডিং গুলো থেকে পালানো কোনো ব্যাপার?
বলেই উল্টো দিকে দৌড়। পাশাপাশি দুইটা ছাদ, একটা থেকে আরেকটায় যাওয়া আসা করা যায়।

মাঃ আসবি না বাসায় 
আমিঃ আমার থাকার অনেক জায়গা আছে, কিন্তু আজ বাসায় আসলে আমি সিওর শহীদ হবো।
আমার এখনো বিয়েই হয়নি, এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না
মাঃ দাড়া তোর বিয়ে দিচ্ছি আমি। 
সবাই আমাকে জোকার মনে করে হাসছে।
..............................(চলবে)

Post a Comment

Previous Post Next Post