লেডি কুইন (চ্যাপ্টার টু)
পর্ব ৫
লেখা: Meherab Kabbo
বিল্লার খোঁজ মিললো হাসপাতালের বেডে। ডালিয়া চৌধুরী খবর পাওয়ার সাথে সাথে বাসা থেকে বেরিয়ে যখন গাড়িতে উঠতে যাবে তখন মর্জিনা খান পিছন থেকে
-সবে খেলা শুরু। একা যাস না তুই ও মরতে পারিস।
ডালিয়া চৌধুরী তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে
-শুরু হওয়ার আগেই শেষ করে দিবো খেলা। আর তোদের দুজনকে ও আর বেশি দিন বাচিয়ে রাখবো না।
ডালিয়া চৌধুরী গাড়িতে উঠে চলে গেলো।
হৃদ চশমা খুলে
-পাখি দেখি নিজেই খাচায় এসেছে।
জেসি মুচকি হেসে
-খাচায় আসিনি ভরতে এসেছি।
-ওয়াও তাই নাকি৷ চলো যায় তবে।
-এত তাড়াতাড়ি
-হুম।
-সবুর করো হবে সময় মতো।
জেসি কথাটা বলে চলে গেলো। হৃদ সহ সবাই জেসির চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। জেসি যেয়ে ক্লাসরুমে বসতেই
-এই মেয়ে তোমার সাহস তো কম নয়। তুমি এখানে বসছো কেন?
জেসি অবাক হয়ে
-কেন? ফাঁকা বেঞ্চে এ তো।
-এটা শুধু মাত্র তাসনিমের জায়গা। ও জানতে পারলে তোমার খবর করে দিবে।
জেসি কিছু না বলে উঠে পিছনের বেঞ্চে যেয়ে বসলো।
আয়ান সবার কথা শুনে হা হয়ে গেছিলো কারণ এটা আর কেউ নয় তাসনিম। আয়ান আর এক মুহুর্ত দেরি না তাসনিমকে কোলে তুলে নিয়ে চলে গেলো। তাসনিমকে নিয়ে হাসপাতালে যেতেই নার্স ডাক্তাররা সবাই এগিয়ে আসে। তাসনিমকে দেখে ঢোক গিললো। ডাক্তার বলে উঠলো
-ব্যস্ত ওটিতে নিয়ে যাও।
তাসনিমকে নিয়ে ওটিতে চলে গেলো। ডাক্তার বলে উঠলো
-আর কোনো হাসপাতাল চোখে পড়েনি। এখানেই আনতে হলো।
আয়ান অবাক হয়ে গেলো ডাক্তারের কথা শুনে। ডাক্তার চলে গেলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাসপাতালের সামনে গাড়িতে ভরে গেলো। আয়ান অবাক হয়ে গেলো। ইমন গাড়ি থেকে নেমে বলতে লাগলো, আমার বোন কোথায়। আমার কোথায়। ছুটে ভেতরে ঢুকে গেলো৷ আয়ানের আর চিনতে বাকী রইলো না এটা ইমন। তাসনিমের ভাই।
ডালিয়া চৌধুরী হাসপাতালে পৌছেই বিল্লার বেডে বিল্লার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বিল্লার হাত পা মাথায় ব্যান্ডেজ করা। ডালিয়া চৌধুরীকে দেখে মাথাটা নিচু করে নিলো। ডালিয়া চৌধুরীকে একটা চেয়ার এনে দিলো। সেখানে বসে
-বিল্লা ইভূকে কারা মারলো৷ কি হয়েছিলো গতকাল রাতে।
বিল্লা দু হাত জোড় করে কান্না করে
-ম্যাডাম আমি জানি না। ইভূকে মেরে ফেলছে আমি দেখিনি।
-কেন তুই তো ইভূর সাথে ছিলি।
-হ্যা ছিলাম তখন আমি আর ইভূ গল্প করতে করতে যাচ্ছি সামনে বাইকের উপর একটা ছেলে মাক্স পড়া অবস্থায় বসে ছিলো। ইভু বলে উঠলো
-কে রে তুই? আমার রাস্তা আটকিয়ে দিয়ে বসে আছিস।
ছেলেটা কোনো কথা বলে না। ইভূ পিস্তল বের করে ছেলেটার দিকে ধরে
-কথা যখন বলছিস না তাহলে তোকে বুঝিয়ে দি আমার পথের সামনে থাকলে কি হয়?
ইভু যখনি টিগ্যার চাপ দিতে যাবে তখনি ইভূর হাত থেকে পিস্তলটা মাটিতে ছিটকে পড়ে যায়। বিল্লাকে পিছন থেকে প্রথমে মাথায় আঘাত করে বিল্লা মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। ছেলেটা হাতে পিস্তল হাতে ঘুরাতে ঘুরাতে সামনের দিকে এগোতে লাগলো। বিল্লার ঙ্গান হারিয়ে গেলো।
ডালিয়া চৌধুরী কথাগুলো শুনে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো। বিল্লা ভয়তে কাঁপতে কাঁপতে
-ম্যাডাম আমি আর কিছু জানি না।
ডালিয়া চৌধুরী রাগে
-কে কে কে মারছে। কার এত বড় বুকের পাটা আমার লোকরে মারার।
ডালিয়া চৌধুরীর ফোনটা বেজে উঠলো । ঘাবড়ে যেয়ে ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে
-কি শুনছি আমি এসব।
-চিন্তা করেন না যে করছে তাকে আমি বের করবোই।
-ওর সাথে যে ছিলো তাকে পেয়েছো।
-হ্যা হ্যা পেয়েছি।
-ওর থেকে কোনো খোঁজ
-মাক্স পড়া একটা ছেলে।
ডালিয়া চৌধুরী সবকিছু বললো ওপাশে থেকে
-মেহেরাব
ডালিয়া চৌধুরী চমকে উঠলো নামটা শুনে৷ হাত কাপাকাপি শুরু হয়ে গেলো। ধোক গিলতে থাকলো। ওপাশ থেকে আবার ও বলে উঠলো
-ওকে তো মেরে ফেলা হয়েছে ও আসবে কি করে। নিশ্চয়ই কেউ আমাদের ভয় দেখাতে এসব করছে। তুমি খোজ নাও ব্যস্ত।
-ঠিক আছে।
ফোনটা কেটে দিলো। ডালিয়া চৌধুরী হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গেলো
ইমন ওটির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। নার্সরা বের হচ্ছে আর ঢুকছে। একজন নার্স এসে আয়ানের হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিলো। আয়ান দ্রুত যেয়ে মেডিসিন এনে ওটির সামনে এসে দাঁড়ালো। নার্স বের হয়ে আয়ানের থেকে মেডিসিন নিয়ে ঢুকে পড়লো। ইমন খেয়াল করলো আয়ানের জামায় রক্ত লেগে আছে। মেডিসিন এনে দিলো। ইমন আয়ানকে কিছু বলতে যাবে তখনি নার্স বের হয়ে
-ইমারজেন্সি রক্ত লাগে
-কি রক্ত
- এ লেগেটিব।
আয়ান বলে উঠলো
-চলুন আমি দিবো আমার ও এ নেগেটিভ৷
-আচ্ছা আসুন ব্যস্ত।
নার্সের পিছনে আায়ন চলে গেলো। ইমন অবাক হয়ে গেলো। ডালিয়া চৌধুরীর কানে খবরটা যেতেই ডালিয়া চৌধুরী হাসপাতালে চলে আসলো।
তাসনিম ক্লাসে আসছে না দেখে তাসনিমের ফ্রেন্ডরা বেশ চিন্তিত। একজন এসে ক্লাসে বললো তাসনিম হাসপাতালে। খবরটা শোনার সাথে সাথে তাসনিমের বন্ধুরা বেরিয়ে পড়লো। হৃদ সবাইকে এভাবে যেতে দেখে জিঙ্গেল করলে তাসনিমের কথা বলাতে ওদের সাথে হৃদ ও চলে যায়।
ওটি থেকে ডাক্তার বের হলো। ডালিয়া চৌধুরী ডাক্তারের সামনে দাঁড়িয়ে পড়লো। ডাক্তার বলে উঠলো
-চিন্তার কোনো কারণ নেই সব ঠিকঠাক আছে। কিছুক্ষণ পর বেডে দিবো ওখান থেকে দেখেন।
ইমন নার্সকে জিঙ্গেস করলো
-যে ছেলেটা রক্ত দিলো ও কোথায়
-ওনি তো চলে গেছেন। আর ওনিই তো আপনার বোনকে এখানে নিয়ে আসে। আর একটু দেরি হলে হয়তো আমাদের কিছু করার থাকতো না।
নার্স চলে যায় কথাটা বলে। ডালিয়া চৌধুরী বলে উঠলো
-কার কথা বলছে
-চিনি না।
-সমস্যা নেই আমার লোক দিয়ে খুঁজে বের করে আনা যাবে।
তাসনিমকে বেডে দেওয়া হলো। সবাই তাসনিমকে দেখে চলে গেলো।
আয়ান বাসায় ফিরলে রিমি দেখে আজ ও শার্টে রক্ত। রিমি বলে উঠলো
-আজ ও কি মুরগি জবাই করতে যেয়ে লেগেছে
-না৷ আজ একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে লেগেছে।
রিমি অবাক হয়ে
-কেন কি হয়েছে
-এক্সিডেন্ট।
আয়ান ওয়াশরুমে চলে গেলো
লেডি কুইন চ্যাপ্টার ২ পর্ব ৫ |
জেসি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে কয়েকটা ছেলে জেসিকে ঘিরে ধরলো। জেসি ভয়তে কাঁপতে লাগলো আর বলতে লাগলো
-কারা আপনারা আমার পথ আটকায়ছেন কেন?
-আহা সুন্দরী ভয় পাচ্ছো কেন? তোমাকে নিয়ে অনেক আনন্দ দিবো।
জেসিকে একজন টাচ করতে যাবে জেসি ছেলেটার মুখে কষে চড় মেরে দিয়ে দৌড় শুরু করলো। জেসির পিছনে ছেলেগুলো। জেসি নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে দৌড়াচ্ছে। ফাঁকা রাস্তা কোন কাক ও নেই। জেসি রাস্তার উপর পড়ে গেলো। ছেলেগুলো কাছাকাছি চলে আসলো এর ভেতর পুলিশের গাড়ি এসে থামলো। ছেলেগুলো পলালো। আকবর গাড়ি থেকে নেমে জেসিকে তুলে
-এভাবে চলাফেরা করলে বিপদে সবসময় পড়তে হবে। সবাই তো আর ভালো মানুষ না।
রয় এসে
-স্যার সবগুলো পালিয়েছে।
-ওকে জিপে উঠো। এই মেয়ে তোমার তো পা কেটে গেছে চলো তোমাকে ডাক্তারের নিয়ে যায়।
-না স্যার। ধন্যবাদ।
-চুপচাপ জিপে বসো।
জেসি জিপে বসলো। আকবর ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলো। ড্রেসিং করে ওষুধ নিয়ে আকবর জেসিকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
তাসনিমের ঙ্গান ফিরলো ইমন বলে উঠলো
-কে তোকে মেরেছে?
-কেউ না ভাইয়া। কন্ট্রোল ঠিক রাখতে পারিনি৷ তুমি এত চিন্তা করো না।
-তোকে কতবার বলছি তুই এভাবে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাবি না। তুই ছাড়া আমার কে আছে আর।
-ভাইয়া।
-তুই আর বাইক চালাবি না। গাড়িতে ভার্সিটিতে যাবি আর আসবি।
-ঠিক আছে।
পরেরদিন সকালে
একটা স্তুপের উপর পাচজনের লাশ পড়ে আছে। আকবর সেখানে উপস্থিত হলো। রয় লাশগুলো দেখে যা বললো আকবর হা হয়ে গেলো
লেডি কুইন |
(Waiting for next part)
Post a Comment