নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
পর্ব ০৮
কলমে M K
তিথি বলে বসলো
-বাব্বাহ তোরা তো জুটি হয়ে গেলি। ভাবা যায়।
কাব্য আর আদিবা চেয়ে পড়ে। তিথি থ ম খেয়ে
- না মানে দুজনকে বেশ ভালো মানাইছে।
কাব্য এবার মাথা নিচু করে নিলো। আদিবা বড় বড় চোখ করে
-তোর কি মাথা গেছে? কি যা টা বলছিস।
তিথি বলে বসলো
- আমি কি তোদের বলছি হ্যা? আমি ফোনে বলছি ওকে। কেন রে তোদের বললে ভালো হতো।
আদিবা তিথির দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে
-ঝাঁটা চিনোস।
- হইছে নে তোর খাবার আনছি খেয়ে নে। আর কাব্য তুই মাথা নিচু করে আছিস কেন?
তিথি মনে মনে বলছে ভাগ্যিস হেড ফোনটা কানে ছিলো। নাই আদিবা আমার কল্লা মটকাই দিতো। আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে। আদিবা তিথিকে বললো
-আমার সাথে একটু বাহিরে চল তো।
- কেন রে? তুই যা খেয়ে আয়। পরে একবারে যাবো৷
- না আমার একটু দরকার আছে চল তো।
আদিবা তিথিকে নিয়ে বাইরে যাবে। তখন কাব্য বললো
- তিথি ফোনটা দে তো।
- কি করবি? ঐ চুন্নিকে ফোন দিবি।
- না। বাসায় ফোন দিবো।
- সত্যি তো।
- হুম।
তিথি বাসার নাম্বারে কল দিয়ে কাব্যের হাতে ফোন দিয়ে বাইরে গেলো। করিম মিয়া ফোনটা ধরে
- বাজান কেমন আছিস? কোনো অসুবিধা হয়নি তো।
- না বাবা। ভালো আছি। তুমি আম্মায় কেমন আছো।
- হ বাজার ভালো আছি। খাওয়া দাওয়া করছিস।
- হ্যা আব্বু খেয়েছি। তোমরা করছো?
- হ বাজান করেছি।
- আম্মায় কই?
- বাসায়। আমি জমিতে আসছি।
- বাসায় যেয়ে কল কইরো।
- আচ্ছা বাজান।
ফোনটা কেটে দিলো।
কিছুক্ষণ পর তিথি বেডে ঢুকলো। চুলো গুলো এলোমেলো হয়ে গেছে। কাব্য দেখে অবাক। কাব্য বলে বসলো
- বাইরে যেয়ে কি দুজনে মারামারি করলি।
তিথি রাগান্বিত হয়ে
- চুপ থাক তোর জন্য সব হয়েছে।
কাব্য অবাক হয়ে
-মানে
-একটা কথা বলবি না। তা না হলে কি কল্লা চিপে মেরে ফেলবো।
- এতো রেগে আছিস কেন ?
- তোকে চুপ থাকতে বলছি। চুপ থাক।
আদিবা খাওয়া শেষ করে বেডে ঢুকলো। হা হয়ে
- কি রে তুই কার সাথে মারামারি করলি। তোর এই অবস্থা কেন?
আদিবার কথা শুনে কাব্য হা হয়ে গেলো। তিথি রাগি গলায়
- কথা বলবি না।
আদিবা মুচকি হেসে
- এই কাব্য তোমরা কি দুজনে মারামারি করছো।
কাব্য মাথা নাড়ালো। তিথি উঠে দাঁড়িয়ে
- আদিবার বাচ্চা তোকে আমি
আদিবা বললো
- কি হয়েছে বলবি তো। এতো রাগছিস কেন?
এর ভেতর ডাক্তার বেডে প্রবেশ করলো। ডাক্তার বললো
- কি অবস্থা এখন?
-জ্বি ভালো।
তিথি বললো
- আমরা কি ওকে এখন নিয়ে যেতে পারি।
- হ্যা নিশ্চয়ই।
তিথি কাব্যের মাথার চুল টেনে দিয়ে
- আর হাত কাটিস আর তোকে হাসপাতালে আনবো না।
ডাক্তার আর আদিবা হেসে দিলো।
কাব্যকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে গেলো। কাব্য বললো
- আমি ম্যাচে চলে যায়।
তিথি চোখ বড় বড় করে দিয়ে
- হ হ তুই ম্যাচে যা আবার একটা ঘটনা ঘটা।
-তিথি তুই ঠিকি বলছিস।
- তাহলে আমি যাবো কই?
- আমাদের সাথে যাবি।
- কিন্তু
- কোনো কিন্তু না। ডায়নি টার বিয়ে হয়ে যাক তোর শোক কেটে যাক তারপর তুই ম্যাচে চলে যাস। ততোদিন আমাদের বাসায় থাকিস।
- আমি আর কিচ্ছু করবো না। আমি ম্যাচে যেয়ে থাকতে পারবো।
- আমাদের বোকা পাইছিস। চুপচাপ যাবি
নাই কল্লা টিপে মেরে রেখে যাবো।
- কিন্তু তোর ফ্যামিলির লোকজন।
- ফ্যামিলি নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবে না।
একটা সিএনজিতে উঠে চলে গেলো তিনজনে। সিএনজি টা একটা বাসার সামনে এসে দাড়ায়। কাব্যকে নিয়ে বাসার ভেতরে ঢুকে। দরজার কাছে যেয়ে কলিং বেল দিলো। একজন মধ্য বয়স্ক লোক এসে দরজা খুললো। আদিবা কাব্যকে দেখিয়ে
- মামা ও
লোকটা আদিবাকে থামিয়ে দিয়ে
- ও হচ্ছে কাব্য। সেই পাগলটা ।
কাব্য অবাক হয়ে গেলো। তিথি বললো
- মামা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকবা নাকি ভেতরে ঢুকতে দিবা।
- ও হ্যা হ্যা আয় আয়।
কাব্যকে নিয়ে ঘরে ঢুকলো। আদিবা বললো
-মামা মামি কই?
- এই তো আমি।
মামি সামনে এসে একটা গ্লাস কাব্যের সামনে ধরলো। তিথি কাব্যকে বললো
- কি রে গ্লাসটা ধর?
কাব্য গ্লাসটা ধরলো। আদিবা আর তিথিকে দিলো।
মামি বললো
- বাইরে থেকে এসেছো ঠান্ডা জুস খেয়ে নাও ভালো লাগবে।
কাব্য জুস টুকু খেয়ে নিলো। আদিবা জুস খাওয়া শেষ করে
- তিথি আমি ওয়াশ রুম থেকে আসি। তুই ওর সাথে গল্প কর।
- ঠিক আছে।
মামি কাব্যের পাশে বসে
- কি অবস্থা তোমার এখন?
- জ্বী আলহামদুলিল্লাহ।
- এতো লজ্জা পেতে হবে না। নিজের পরিবার মনে করো।
কাব্য মাথা নাড়ালো। মামি উঠে দাঁড়িয়ে
- তিথি আমি কিচেনে যাচ্ছি। ওকে একা ছাড়িস না।
-ঠিক আছে।
মামি চলে গেলো কিচেনে। কাব্য জিঙ্গেস করলো
- এনারা কারা।
- আদিবার মামা মামি।
- আদিবার মা বাবা.।
-তারা তো গ্রামে। ও মামার বাসায় থেকে পড়াশোনা করে।
- ওহ।
কাব্যের ফোনে ফোন আসলো। কাব্য ফোনটা বের করতেই, তিথি এক ঝটকা মেরে ফোনটা কেড়ে নিলো। কাব্য অবাক হয়ে গেলো৷ তিথি ফোনের স্কিনে বাবা নামটা দেখে কাব্যকে দিয়ে দিলো। কাব্য ফোনটা রিসিভ করলো। কাব্য বললো
-আম্মা কেমন আছো
- এই তো ভালো। তুই কেমন আছিস।
- জ্বী আম্মা ভালো। খেয়েছো।
- হ রে অনেক আগেই খেয়েছি।
- মিথ্যা বলো কেন? আব্বায় কখন আসছে।
- মাত্র।
- তাহলে রান্না এখনো হয়নি।
- হয়েছে হয়েছে। তুই এতো চিন্তা করিস নে। তুই খেয়েছিস।
- হ্যা খেয়েছি। আচ্ছা আম্মা যাও রান্না করে খেয়ে আমাকে কল করো ওকে।
তিথি আদিবাকে দেখে পুরো হা হয়ে গেলো। তিথি কেনু দিয়ে কাব্যকে গুতো দিলো। কাব্য তিথির দিকে তাকিয়ে পড়লো। তিথি বললো
- আরে বোকা আমার দিকে না সামনের দিকে তাকা।
কাব্য সামনের দিকে তাকিয়ে যা বললো তাতে তিথির মুখটা কালো হয়ে গেলো।
(Waiting for next part)
Post a Comment