জীবিত লাশের রহস্য পর্ব ৩ | jibito lasher rojoshsho part 3
পর্ব ৩
লেখক সাদমান আদ্-দ্বীন
পুলিশ অফিসারঃ সিয়াম
প্রতীকঃ হ্যা, সিয়াম সাহেব, সব কেস রিসার্চ করে কিছু পাওয়া গেলো?
সিয়ামঃ হ্যা, অনেক কিছু পেয়েছি
প্রতীকঃ যেমন?
সিয়ামঃ এরকম খুন এর আগেও হয়েছে, পেটে চাকু মেরে, আগে একজন খুন করতো, নাম অভি সাহু, আজাদ সাহেবের বাবা সে সময়কার এই এলাকার প্রধান ছিলেন, তিনি অভিজিতেকে পাগল বলে এলাকা ছাড়া করেন।
প্রতীকঃ তারপর?
সিয়ামঃ অভিজিতের ছেলে ছিলো, কিন্তু তার কোনো খোজ খবর নেই।
প্রতীকঃ কেস সলভ্ড।
প্রথমত হনুমানের কথা থেকে শুরু করি,
আজাদ সাহেব ওর খুন হওয়া দেখেছিলেন, কিন্তু পরেরদিন তাকে জীবিতও দেখতে পান।
আর জীবিত মানুষের খুনের কথা কেউ বিশ্বাস করবে না, বুঝতেই পারছেন আজাদ সাহেব যদি কারও কাছে বলতেনও তবুও কেউ বিশ্বাস করতো না।
সিয়ামঃ এতে লাভ হতো কার?
প্রতীকঃ সব কি এখানে শুনবেন নাকি, কিছু জিনিসের উত্তর পাওয়া বাকি এখনও, আজ রাত টা আমাকে সময় দিন।
আর হ্যা, সুখলালের কোনো খোজ পেলেন কি?
সিয়ামঃ না তো, আমার তো মনেও নেই
প্রতীকঃ ওকে খুজে বের করতে হবে।
রাতের বেলা, সবাই ঘুমাচ্ছে, কিন্তু প্রতীকের চোখে ঘুম নেই।
সে এখনও ভাবছে। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ করেই বুঝে গেলো সব কাহিনি।
প্রতীক রাতেই সিয়াম সাহেব কে কল দিলো,
সিয়ামঃ এত রাতে কল দিলে যে
প্রতীকঃ স্যার, কাল সকালে একটা কাজ করতে হবে, আগের যুগের মতো এলাকার সবাইকে একজায়গায় নিয়ে বিচার বসাতে হবে, আপনার কেস সলভ হয়ে যাবে।
পরেরদিন সকালে, প্রতীকের কথা মতো সিয়াম সাহেব সব ব্যবস্থা করলেন।
বিচারকের জায়গা ফাঁকা, প্রতীক পাশেই দাড়িয়ে।
প্রতীকঃ আপনারা ভাবছেন, হঠাৎ কি দিয়ে কি হচ্ছে, তাহলে শুরু থেকে শুরু করি।
আমাদের আজাদ সাহেব খুন হয়েছেন, সাথে আরও কয়েকজন। তবে এই খুন আজ থেকে না, আরও অনেক আগেই শুরু হয়েছে,
অভিজিৎ নামের একজন খুন করতো, যাকে আজাদ সাহেবের বাবা পাগল বলে গ্রামছাড়া করেছিলেন।
তার ছেলে ছিলো, নামটা খুজতে আমার আজাদ সাহেবের বাড়িতে অনেক পুরোনো কগজ ঘাটতে হয়েছে।
অভিজিতের ছেলের নাম সুখলাল।
মনে পরে কিছু বায়েজিদ?
বায়েজিদঃ বাগানের কর্মচারী?
প্রতীকঃ হ্যা, বাগানের কর্মচারী।
কিন্তু সুখলাল কে তো পাওয়া যাচ্ছে না, তাহলে এভাবে সবাইকে কেনো ডাকলাম?
তাহলে আরো শুনুন, আজাদ সাহেব মৃত্যুর আগে বাঘের কথা বলেন, তাদের বাগানে পাহাড়ায় একটা বিদেশি কুকুর আছে, যার নাম টাইগার, অর্থাৎ বাঘ।
আমি গেলাম টাইগারের ঐখানে, কিন্তু না, সেখানেও কিছু নেই, তাহলে?
টাইগারের ঘরটা দেখে খটকা লাগে আমার, বাইরে থেকে এতবড় ঘর, ভিতরে সেই অনুযায়ী ছোট লাগে।
আমি প্রতিটা দেয়াল খুজতে থাকি, আর খুজতে খুজতে একটা দরজা পেয়েও যায়।
কিন্তু সেখানে দেখি সুখলালের লাশ, Dead end।
বায়েজিদের বাবঃ কিন্তু বাবার ঐ জীবিত লাশ দেখার ব্যাপার টা?
প্রতীকঃ সিয়াম সাহেব, এরেস্ট হিম
বায়েজিদঃ দোস্ত হচ্ছে টা কি?
প্রতীকঃ আজাদ সাহেব র্যে জীবিত লাশ দেখেছেন তা শুধু আমি জানতাম, আর তোকে বলেছি, কিন্তু তুই বা আমি তো বলিনি আঙ্কেল কে।
আচ্ছা বাকিটা বলি, হনুমানের মৃত্যুর দিন আমরা দেশে এসেছিলাম, আমার মা বাবার কারণে, বুঝেছিস তো?
আর সুখলাল যাদের খুন করেছে সবার পেটে চাকু মারা, সুধু আজাদ সাহেব ছাড়া।
সিয়ামঃ কিন্তু তারপরও এনার দিকে সন্দেহ যাওয়ার কারণ?
প্রতীকঃ কোনো বাবা তার ছেলে কে বাদ দিয়ে তার নাতি আর নাতির বন্ধুরর নামে কি উইল করবে?
করবে না, কিন্তু আজাদ সাহেবের শেষ উইলে বায়েজিদ আর আমার নাম আছে, আর সাথে তার ছেলে এই সম্পত্তি একদমই ব্যবহার করতে পারবে না তাও উল্লেখ করা আছে।
বায়েজিদ, তোর বাবা নেশায় আসক্ত, তোর দাদা বার বার চেষ্টা করেও তাকে ফিরিয়ে আনতে পারে নি, তোর মা সবই জানে।
কিন্তু কথা এখানেও শেষ হয়নি, আসল কাহিনী হলো তোর দাদার প্রথম উইলে আমি ছিলাম না, শুধু তুই ছিলি, কিন্তু তোর দাদার ভয় ছিলো যদি তুই খারাপ পথে চলে যাস, তাই আমাকে দেখে উইলে আমার নামও দিয়ে দেন, যেটা তোর বাবার সহ্য হয়নি।
তাই আমাকে ফাসানের সব চেষ্টা করেন আঙ্কেল।
বাকিটা তো জানিস ই।
আমি কালই সব বলতে পারতাম, তবে সেই ফেলুদা স্টাইলে কেস সলভ্ করার ভিতর একটা মজা আছে, যেটা আর কোথাও নেই।
কয়ে মাস পর
বায়েজিদের মা নিজের স্বামীর হাতে শ্বশুরের খুনের কথা সহ্য করতে পারেন নি, তাই তিনি সেদিনই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
তবে তার শেষ ইচ্ছে আমরা দুইজন যেনো সবসময় একসাথে থাকি।
বায়েজিদের সব ধাক্কা সামলে উঠতে সময় লেগেছে অনেকটা। এখন সে নরমাল।
আমরা সকালে চেয়ারে বসে চা খাচ্ছি, এমন সময় বাড়িতে অফিসার সিয়ামের আগমন,
সিয়ামঃ প্রতীক সাহেব, আপনাদের জন্য আরো একটা কেস আছে।
(প্রতীক দ্যা ডিটেকটিভ সিরিজের প্রথম গল্প এটা, পরেরটা আসছে কুব শীঘ্রই)
Post a Comment