সিনিয়র গুন্ডি আপু যখন বউ - Sinior apu

 গল্প : সিনিয়র গুন্ডি আপু যখন বউ

লেখক : রিফাত আলী মিথুন

পর্ব : ০১


আমি : শীতের সকালে সাধের ঘুম হারাম করে বিছানা থেকে উঠতে হলো । ঠান্ডা পানি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে সকাল সকাল প্রাইভেট পড়তে যাইতেছি । বুঝি না এই শীতের সকালে প্রাইভেট যে কেন খুলে রাখছে । প্রাইভেট পড়াইয়া টাকা কামাই করবো স্যার আর সাথে আমার মত হাজারো নাদন অবুঝ শিশুরে নিহত কইরা ফেলাই বো । শীতের সকালের রাস্তাও ফাঁকা , কেউ নাই । তাই একা একা সময় পার করার জন্য গলা ফাইটা কবিতা আবৃত্তি করতে শুরু করলাম :-

               সকালে উঠিয়া আমি 

               জোরে জোরে চিল্লাই

              ১৮ বছর বয়সেও আমার

              GF নাই কিল্লাই 

              কিল্লাই রে , ও কিল্লাই কিল্লাই 😭😭

স্বর্ণা : সকালে উঠে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিলাম তখনই কথা গুলো শুনে পাইলাম তাই রেগে বললাম , ঐ মাইয়া মানুষ দেখলেই কবি হওয়ার মন চায় না । দাঁড়া তোরে আজ খাইছি । এই বলে তার দিকে যেতে লাগলাম ।

আমি : কথা গুলো শুনে বামে তাকিয়ে দেখি স্বর্ণা ।আল্লাহ গো সকাল সকাল কার হাতে ফেলাইলা । এই সকাল সকাল আমাকে স্বর্ণার হাতেই পড়তে হলো । কথায় আছে না , যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয় । আমি কি জন্য যে কবিতা বলতে গেলাম । আল্লাহ তুমি আমারে বাঁচাইয়া লোও । আজকে যে কার মুখ দেখে উঠে ছিলাম । আজ সারাদিন মনে হয় খারাপ যাইবো ।

সিনিয়র গুন্ডি আপু যখন বউ - Sinior apu jokhon bow


স্বর্ণা : ঐ তুই আমারে দেইখা কবিতা কইলি ক্যান । তোর কি মরনের শখ জাকচ্ছে ।

আমি : বিশ্বাস করেন চাচি থুক্কু গুন্ডি আপু আপনারে দেইয়া বলি নাই । আমি তো আপনারে দেখিও নাই । আমি আপনারে এসব বলতে পারি ।

স্বর্ণা : কিইইই তুই আমারে চাচি কইলি । আমারে কোন দিক থেকে তোর চাচি মনে হয় হ্যা । আবার তুই আমারে গুন্ডি ডাকস । আর আমার কাছে মিথ্যা কথা কস । এই স্বর্ণার কাছে মিথ্যা কথা কস । তোরে তো আজ আমি খাইছি

আমি : বিশ্বাস করেন আমি ইচ্ছা কইরা আপনারে চাচি ডাকি নাই আর গুন্ডিও ডাকি নাই , ভুল কইরা মুখ ফুসকে বের হয়ে গেছে । আর আপনার কাছে মিথ্যা কথা বলার সাহস এই অধমের নাই । 

স্বর্ণা : তোরে আমি অতো সহজে সারছি না । তুই আবাদত ১০০ বার কান ধইরা উঠানামা কর । বাকি শাস্তি এখন মনে পড়ছে না । যখন মনে হবে তখন দিবো নে ।

আমি : আমারে যাইতে দেন আপু । আমার প্রাইভেট আছে । আর কথা দিতাছি আর এমন ভুল কখন হবে না । এবারের মত মাফ করে দেন । 

স্বর্ণা : কোন ছাড় নাই । এই স্বর্ণা বলেছে মানে এটাই ফাইনাল । তাড়াতাড়ি উঠবস শুরু কর নাহলে তোর কপালে আরো দুঃখ আছে ।

আমি : প্লিজ আমাকে ছেড়ে দেন । আর কোন দিন এমন হবে না কথা দিচ্ছি । নাদান বালকের উপর দয়া করেন । 

স্বর্ণা : ঐ তুই উঠবস শুরু করবি নাকি তোর আরো শাস্তি বাড়াবো । আইছে নাদান বালক । অনেক রেগে বললাম 

আমি : এই না না , আমি শুরু করতেছি । এই বলে আমি রাস্তায় মাঝেই উঠবস শুরু করলাম । শীতের সকালের কারণে লোকজন ছিল না । কয়েক বার উঠবস করতেই দেখি স্বর্ণা গুন্ডি একটু অন্যমনস্ক হয়ে আছে তাই আমি ও এই সুযোগে মার দৌড় । দৌড় দিতে দিতে চিৎকার করে বলে উঠলাম , " পালা ভাই পালা , আপন প্রাণ বাঁচা " নিজে বাঁচলে বাপের নাম । আরেকটু হইলে মান সম্মানের ফালুদা হইয়া যাইতো । এক দৌড়ে প্রাইভেটে চলে গেলাম । মাঝ পথে আর থামি নাই । স্বর্ণা গুন্ডি যদি আমাকে একবার ধরতে পারে তাহলে আমার আর কোন রক্ষা নাই ।

স্বর্ণা : আমি একটু অন্য মনস্ক হওয়ার সাথে রিফাত সেখান থেকে দৌড় দিল । এই রিফাত এর বাচ্চাকে একবার শুধু হাতে পাই । তারপর দেখাবো , এই স্বর্ণা কি জিনিস হু । তারপর ওখানে আর দাঁড়িয়ে না থেকে আমার এক ফ্রেন্ডের বাসায় যেতে লাগলাম ।

আমি : প্রাইভেটে এসে স্যার কে বললাম , " স্যার ভিতরে আসবো " । স্যার বললো, আরে রিফাত স্যার যে এতো তাড়াতাড়ি কেন , আর একটু পর আসলেই তো পারতে । স্যার এর কথা শুনে ভাবতেছি আমি কি সত্যি তাড়াতাড়ি চলে এলাম , হাত ঘড়িতে সময় দেখে তো আমি অবাক । কারণ প্রাইভেট আর মাএ ৩০ মিনিট আছে । এবার ভালো ভাবে বুঝতে পারলাম স্যার এর কথার মানে টা কি । আমি তখন স্যার কে বললাম , স্যার আর বলিলেন না , আমি বাসায় থেকে ঠিক সময় বের হয়েছিলাম কিন্তু মাঝ পথে এক সাতচুন্নীর সাথে দেখা । জান নিয়ে বেঁচে ফিরতে দেরি হয়ে গেল । তখন স্যার আমাকে বললো , " বাপজান এমনি থেকেই তো দেখি করে আইছেন । এখন আবার গল্প করে সময় টা নষ্ট করিয়েন না । দায়া করিয়া নিজের জায়গায় গিয়ে বসে ক্লাসে মন দেন । স্যার এর কথা শুনিয়া আমি অনেক কষ্ট পাইলাম । আমি স্যারকে আইচ্ছা বলে নিজের জায়গায় গিয়ে বসে পড়িলাম । এবার মনে মনে ভাবছি , ইজ্জত আলীর ইজ্জত নাই , সত্যি কথার ভাত নাই । সত্যি কথা বললাম অথচ স্যার বিশ্বাস করলো না আমারে । যাকগে সে সব কথা , মনে দুঃখে পড়ায় মন দিলাম ।


চলবে -------------

Post a Comment

Previous Post Next Post